কানহা
কানহা জাতীয় বন্যপ্রাণী উদ্যান, দেশের বৃহত্তম উদ্যান যেটি মধ্যপ্রদেশের পিঠারি অঞ্চলে বিস্তৃত। উদ্যানের ব্যাপ্তি প্রায় ১৯৪৫ বর্গ কিমি। এখানে ২২-টি প্রজাতির স্তন্যপায়ী পশু ও ৩০০প্রজাতির পাখির বাস।
দেশিবিদেশি পর্যটকদের কাছে Kanha National Park -এর আকর্ষণ, সর্বকালের বন্যজীবনের অনাস্বাদিত অভিজ্ঞতা পর্যটককে ছুটিয়ে নিয়ে যায় কানহার অন্দরে। রুডইয়ার্ড কিপলিং এই পটভূমিতেই রচেছিলেন তাঁর বিখ্যাত শিশু সাহিত্যকীর্তি ‘Jungle Book’, যার কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘Mowgli’ আজও ছোটো-বড়ো সকলের সমান প্রিয়।
কানহা ন্যাশনাল পার্কের কোর এরিয়া ৯১৭ কিলোমিটার আর বাফার এরিয়া ১১৩৪ কিলোমিটার। এখানে মোট চারটি Forest Core Area আছে ।সেগুলি হল কানহা, কিশলি, মুক্ষি, সারহি। এই অঞ্চলে তিনটি বাফার এরিয়া আছে ।সেগুলি হল কাটিয়া, খাপা এবং সিজুক।
জঙ্গলটি মূলত শাল গাছে ঘেরা।শাল গাছের ঘন বনস্থলির মাঝখান দিয়ে কুলকুল শব্দে বয়ে যায় দুটি নদী– সুলকুম ও বানজার। নির্ভয়ে বন্যপশুরা বিচরণ করে এই জঙ্গলে। পর্যটকদের জঙ্গল ভ্রমণের অভিলাষ পূর্ণ হয় যখন সত্যি সত্যি বাঘের দেখা মেলে।
Wildlife conservation-এর উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৩৩ সালে কানহার প্রায় ২৫০বর্গ কিমি অঞ্চলকে অভয়ারণ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মূল কানহা অরণ্যটি তিনটি উপত্যকায় বিভক্ত।কানহা, এর পূর্ব দিকে হালোন ও পশ্চিমে বানজার উপত্যকা। জঙ্গলের সীমানায় সুলকুম নদীর সূত্রপাত। ১৯৫০ সাল অবধি এই জঙ্গলে বাঘ ও বারশিঙ্গা হরিণের নির্বিচারে হত্যা চলতে থাকে। ‘প্রোজেক্ট টাইগার’ শুরু হওয়ার ফলে বাঘেদের অস্তিত্ব সংকটের বিষয়টি অনেকটা ঠেকানো গেছে।
বর্তমানে কানহায় বাঘের সংখ্যা ৬০০০। বাঘ দেখতে গেলে হাতির সওয়ারি অথবা জিপ সাফারি করাই শ্রেয়। বাঘ ছাড়াও এজঙ্গলে নজরে পড়বে গউর, ভাল্লুক, নীলগাই, লঙ্গুর লুপ্তপ্রায় কৃষ্ণসার হরিণ প্রভৃতি।প্রতিবছর দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসেন বন্য পশুদের খুব কাছ থেকে দেখতে। তবে জঙ্গলে প্রবেশ করার আগে কিছু নিয়ম কানুন মানতে হয় । পারমিট বের করে নির্দিষ্ট গাইড এর সঙ্গে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত অবস্থায় জঙ্গল ভ্রমণে যাওয়া যায়।