রায়মাটাং-এর ডেরা ছেড়ে রাঙামাটি পরের ঘাঁটি। গাড়িতে উঠতে যাব, সরযু কারকি তার সোমত্ত মেয়েটিকে গুঁজে দিয়ে বলল, ওকে হাটের মুখে নামিয়ে দেবেন। এদিকে হাট কোথায় আজ? এই পাহাড় উতরোলেই বুধবারের জটারে হাট। ‘জটারে’ শব্দটায় মুখে মৃদু হাসির লক্ষণ ফুটে উঠল তার। গাড়িতে ততক্ষণে সতেরো বছর বয়সি চন্দ্রা কারকি ঢুকে পড়লে অনিল ভান্ডারি তার গাড়িটি সচল করল।

দু’ধারে গভীর বন। পাথুরে পথে বোলেরো মাতালের মতো টালমাটাল নামতে থাকে। এ পথে শ্বাপদের সন্ত্রাসে চলাচল বড়ো সাবধানে, ভান্ডারি বলছিল। বিশেষ করে গউর, শুয়োর, হাতি। হাতির হান্ডায় (দল) পড়ে গেলে জীবন চৌপাট। চন্দ্রাদের চলাচল এ ভাবেই? মেয়েটি বলে পথ তো একটাই। তোমাদের পড়াশোনা? আমাদের হ্যামিলটনগঞ্জে আসল বাড়ি। ওখানে থেকে কলেজের ফার্স্ট ইয়ার। দাদা ইংরেজি অনার্স করছে। রায়মাটাং-এ তিরিশ বিঘে জমি লিজ নিয়ে ট্যুরিস্ট রিসর্ট গড়ে বাবা-মা পাহাড়ে। আমরা ভাই বোন হ্যামিলটনে। আর ছুটি পেলেই ছুটি রায়মাটাং। বাঃ! ব্যবস্থা তো বেশ। কোথায় বেশ? দেখছেন তো রাস্তা।

ততক্ষণে গাড়ি নেমেছে গেলডুং নদীতে। তারপর আরও দুই নদী, রায়মাটাং ও পানা। চন্দ্রা বেশ বলিয়ে মেয়ে। বলে– ট্যুরিস্ট বুকিং হ্যামিলটনে বসে আমিই সামলাই। পাহাড়ে তো প্রায়শ টাওয়ার ফেল। নদীতে গাড়ি থামাতে হল। নদীকে ঘিরে ধরেছে কয়েকটি দামাল পাহাড়। তাদের ফাঁস কেটে বেরিয়ে গেছে গেলডুং। ছবিবাজ বন্ধুটির শার্টার পড়তেই থাকে। সেই প্রকৃতির মাঝে নেমে এসেছে লেমন রং মেয়ে চন্দ্রা। তার বেশ খানিক উচ্চতা, হৃষ্ট স্বাস্থ্য, পেলব শরীর। মাথায় ওড়নার গুন্ঠনে হাসিখুশি দাঁড়ায় যেন বিউটি কনটেস্টে। ছবি ওঠে এক...দুই...চার নানা মুদ্রায়। নদী-পাহাড়ের জট কাটিয়ে গাড়ি নেমে এল সমতলে। এখানে ফৗজিদের ব্যারাকের সামনেই মদো মাতালের হাট। জটারে অর্থে নেপালিতে তাই বোঝালেও শাকসবজি, শুকনো মাছ, প্রসাধনী, এনামেল বাসন থেকে জুতো জামা, সবই স্বল্প সাধ্যের। তারই ভাঁজে ভাঁজে পেঁয়াজি আলুবড়া আর ঝাঁঝ পানি। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে গণতান্ত্রিক নেশাভূমি। জায়গাটা খোলামেলা। হাট ঘেঁষে চা বাগান। মনোরম পরিবেশে কঞ্চির বেঞ্চে মার্চের দুপুরে বসে আমরাও এনার্জি টনিক নিয়ে ফেলি কয়েক চুমুক করে। অর্থাৎ ছোটো কাচের গেলাসে খয়েরি চা। একেবারে চা বলয়ে বসে চা নামক যে তরলটি গলধঃকরণ করি তাতে না স্বাদ, না গন্ধ। চন্দ্রাকে ছেড়ে এবং জটারে থেকে গাড়ি ছাড়ে। ভান্ডারি ভাষ্য দেয়– এবারে চা বাগানের চ্যানেলে পড়ে গেলেন। আর যে নেশাটি না হলে সকাল-বিকেল বিকল, তাদের জন্মভূমি প্রাণ ভরে দেখে নিন। সত্যিই তো যত দূর দৃষ্টি যায় সবুজ সমুদ্র। নিথর, নিস্তব্ধ। এটা রাধারানি চা বাগান। এই গাছগুলির বয়স কত হবে আন্দাজ দিন তো? কত? বারো-পনেরো বছর? না মশায়, ন্যূনতম পঞ্চাশ। আমাদের নেশার যোগান দিতে গাছগুলির অবিরাম আত্মবলিদান, ভাবুন তো। ভান্ডারি ধরিয়ে দেয় ভাবনাটা। ঠিক। ছাঁটাই কলে না পড়লে একটা গাছ কতদূর বাড়তে পারে? কুড়ি ফুট তো হামেশাই। বীজের জন্যে সংরক্ষিত গাছের ফল সংগ্রহ করতে গাছে চড়তে হয়।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...