উত্তরে ডুয়ার্স সফরে গেলে আমার প্রেসক্রিপশন– কাঞ্চনকন্যায় টিকিট কেটে জানলার পাশে দখল নিয়ে বসুন। পরদিন সকাল থেকেই যাত্রাপথের দু’ধারে ছবির গ্যালারি খুলে যাবে, যার সূচনা গুলমা স্টেশন থেকেই। গুলমা– নামটি যেমন কোমল, তেমন পেলব প্রকৃতি। অতঃপর মহানদী পেরিয়ে মহানন্দা অভয়ারণ্যে প্রবেশ। এই অরণ্য জড়িয়ে কত নদীর খোয়াবনামা। এ যেন নদী নয়, লাজুক লতা কবিতা। কারও নাম লিস, কেউ চপলা ঘিস, কেউ অপ্সরা ডিমা, কেউবা সুন্দরী ডায়না, আঁকাবাঁকা জলঢাকা রেলের জানলায় দেখা দিয়ে চলে গেল, ও চুপিচুপি কি বলে গেল! বন-ছুট নদীর সেই মন-ছুট ডাকের অবাধ্য হয় সাধ্য কার। তিন পাহাড়ের কাঁধে চড়ে করোনেশন সেতু, নীচে তার দুরন্ত তিস্তার বিস্তার।

ঘন বনের মাঝে মাঝে দ্বীপের মতো হল্ট স্টেশনগুলি– নাগরাকাটা, বাগরাকোট, চালসা, মাল, মেটালি, মাদারি। প্রকৃতির উদার বিস্তারের মাঝে বড়ো নম্র সব নাম। স্টেশন কেরনকে প্রথম দেখা এক কুয়াশা ঢাকা শীত-ভোরে। শিশির ভেজা স্টেশন। কয়েক টুকরো কাঠের বেঞ্চ, গ্যাসের বাতি। অনেকটা নীচে একফালি প্ল্যাটফর্মের নির্জন বেঞ্চ-এ একাগ্রচিত্তে বসেছিলেন কৃশকায় শ্বেতকায় ব্রিটিশ বৃদ্ধ।

হ্যাট-টাই-কোট-বুট। হাতে স্টিক। হয়তো চা বাগানের অবসরপ্রাপ্ত সাহেবটি, কেরনকে ভালোবেসে এখানেই স্থায়ী হলেন। প্ল্যাটফর্মের অপর দিকে রেলবাবুদের লাল ইটের কোয়ার্টার। তাদের নিত্যকার ঘর গেরস্থালি। তাদের বুকের ওপরে রেল স্টেশন, পিছনে পাহাড়, বন, সরীসৃপ ঝরনা। নির্জনতা চেরাই করে মাঝে মাঝে বুনো বাইসন নামে রেল পাড়ায়।

এখন আলিপুরদুয়ার নতুন জেলা। কাঞ্চনকন্যা ভিড়ল এসে আলিপুরদুয়ার জংশনে। আমাদের প্রথম হল্ট পরিমলের ঠেক-এ, অর্থাৎ রাজাভাতখাওয়া ট্রেকার্স হাট-এ। কাঠের দেয়াল, কাঠের সিঁড়ি, ঘর, বারান্দা– তক্তা জুড়ে জুড়ে অনবদ্য অনাড়ম্বর এক এথনিক হাট। অনেকটা ধূলি-ধূসর এক বাতিল ক্যাসল। তারই মুখোমুখি ভাতখাত্তয়া রেল স্টেশন।

 

চারিদিকে বুনো গন্ধ নিয়ে প্রাচীনত্বের সিলমোহরে ভাতখাওয়া বনাঞ্চল। এখানে মার্চেন্ট পাড়ায় আলাপ হয়েছিল আশু ঘোষের সঙ্গে। ভদ্রলোকের আশি ঊধর্ব বয়স। ২৮ বছর বয়সে ওপারের (বাংলাদেশ) সাতক্ষীরা থেকে একগুচ্ছ যুবক ভাগ্য ফেরাতে এসে খুঁটি করলেন গহন বনের মাঝে এইখানে। তখনও বন কাটাই দণ্ডনীয় অপরাধ হয়নি। গগনস্পর্শী লালি, কাঞ্চন, শাল, বহড়া কেটে টিম্বার ব্যাবসার ইলাহি সুযোগ। সন্ধে হলে বাইরে বেরোবার সুযোগ কম। টের পেতাম পাকা লাটোর খেতে হরিণ ঢুকেছে বনে। ঘরের বেড়ার পাশে লাটোর ফল চিবোচ্ছে। হামেশাই ঘটত এমনটা।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...