ইতিহাসমাখা মালুটি
ঝাড়খন্ড ও বাংলার সীমান্তে দুমকায় এই মালুটি পর্যচকদের চোখ এড়িয়ে যায়৷। অথচ এখানে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন ১০৮-টি টেরাকোটা মন্দির।
ইতিহাস বলে গৌড়ের বাদশাহ আলাউদ্দিন হুসেন শাহ (১৪৯৫-১৫২৫) তাঁর সৈন্য সামন্ত নিয়ে ছাউনি গেড়েছিলেন মালুটিতে। সেইসময় নাকি তার বেগমের পোষা বাজপাখিটি খোয়া যায়। বেগম-কে খুশি করতে বাদশাহ ঘোষণা করেন যে এই বাজপাখি খুঁজে দিতে পারবে, তাকে উপযুক্ত পারিতোষিক দেওয়া হবে। বসন্ত নামের এক রাখাল নাকি খুঁজে এনে দেয় সেই পাখিটি। সুলতান খুশি হয়ে বসন্তকে কয়েক বিঘা জমি উপহার দেন। সেই জমিতে কোনও খাজনা বসানো হয় না।
বসন্ত রাজা হয়ে দখল নেন সেই ভূখন্ডের এবং পত্তন করেন বাজ বসন্ত রাজত্বের। এই বাজ বসন্তের প্রপৌত্র রাজচন্দ্রের ছেলে, রামচন্দ্রের রাজত্বকালে টেরাকোটা শিল্পীরা গড়ে তোলেন এই মন্দির। চার-চালা স্থাপত্যের এক অনবদ্য নিদর্শন, সঙ্গে পুরাণ কাহিনি সম্বলিত টেরাকোটার কাজ। বাবু কাহিনি থেকে ব্রিটিশ রাজের নানা ঘটনাও খুঁটিয়ে দেখলে, দেখতে পাবেন এই টেরাকোটা টাইলস-এ।
কীভাবে যাবেন : রামপুরহাট থেকে ১৬ কিমি দূরত্বে এর অবস্থান। রামপুরহাট স্টেশন থেকে অটো বুক করে ঘুরে আসতে পারেন মালুটি।
বর্ণময় রঘুরাজপুর
পুরী থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরে এই গ্রামটি পর্যটন মানচিত্রে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। এই গ্রামের নিজস্ব শিল্পকলা দেশে-বিদেশে খ্যাত। রঘুরাজপুর বিখ্যাত এর পটচিত্রের জন্য। শিল্পী জগন্নাথ মহাপাত্রের বংশ-পরম্পরায় এই শিল্পের কাজ এখন অনেকেই শিখে ফেলেছেন। ফলে এ এক শিল্প-গ্রামে রূপান্তরিত হয়েছে। মন্দির ছাড়িয়ে শিল্পীদের গ্রামে এলে দেখা যাবে নানারকম পটচিত্র, কাঠের খেলনা, পাথরের ভাস্কর্য প্রভৃতি। রামায়ণ, মহাভারত থেকে দেবদেবীর চিত্রকলা চোখে পড়ার মতো। সুভেনিয়র হিসাবে সংগ্রহ করা যায়।
কীভাবে যাবেনঃ পুরী থেকে অটো বা গাড়ি ভাড়া করে যাওয়াই শ্রেয়। পুরীর ভুবনেশ্বর রোডে চন্দনপুর। এখানে এসে নির্দেশমতো রাস্তার ডানদিকে রেলগেট পেরিয়ে নদীর ধারে রঘুরাজপুর গ্রাম।
বেলঘরের নির্জনে
সুন্দর নির্জন পাহাড়, নদী আর অরণ্য দিয়ে ঘেরা বেলঘর এক অসাধারণ জায়গা। সমুদ্রতল থেকে এর উচ্চতা ২,২৫৫ ফুট হওয়ার দরুণ, এখানকার তাপমাত্রা, সারা বছরই বেশ মনোরম থাকে। রাতে ভালোই ঠান্ডার অনুভব হয়। সেগুন, শাল, পিয়াশাল, ইউক্যালিপ্টাস, সিলভার ওক এমন নানা গাছে ঘেরা জঙ্গল আর তার মাঝে এক নির্জন বনবাংলো। একটু অ্যাডভেঞ্চার আর নির্জনতা-প্রিয় পর্যটকের জন্য অপূর্ব এক ঠাঁই।