ভালোবেসে বিয়ে করুন কিংবা সম্বন্ধ করে— আপনার জীবনসঙ্গী আপনার স্বামী বা স্ত্রী হওয়ার উপযুক্ত কিনা, তা যাচাই করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।মতের মিল না হলে সম্পর্ক বিষময় হয়ে উঠতে পরে । কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে পারেন যিনি, তিনিই প্রকৃত অর্থে সুখী। তাই বিয়ের আগেই যাচাই করে নিন আপনার সঙ্গীটি আদপে আপনার উপযুক্ত কিনা, তার সঙ্গে আপনার মনের মিল হওয়া সম্ভব কিনা।

যে কোনও মানুষের জীবনে বিয়ে একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আর বিবাহিত জীবনের সাফল্য বহুলাংশেই নির্ভর করে উপযুক্ত জীবনসঙ্গী নির্বাচনের উপর। কয়েকটি অবশ্য করনীয় প্রশ্ন করে নিন বিয়ের আগেই। এতে পরস্পরকে জানতে, বুঝতে অনেকটাই সুবিধা হবে।বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন, সে আপনার সবটুকু মিলিয়ে আপনাকে ভালোবাসে কিনা। শুধু আপনার ক্ষমতা নয়, আপনার অক্ষমতাগুলোকেও সে মেনে নিতে প্রস্তুত কিনা।

আর্থিক সমস্যায় অনেক সময় সম্পর্ক নষ্ট হয়। আপনাদের সম্পর্কের মধ্যে যদি স্বচ্ছতা থাকে তাহলে আপনার প্রতি সঙ্গিনীর ভরসা এই পরিস্থিতেও একই রকম থাকবে, প্রয়োজনে সে আয় বাড়ানোর রাস্তা বের করবে, আপনার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে এই পরিস্থতিতে—তবে বুঝবেন সে আপনার মনের উপযুক্ত সঙ্গী।

তাঁর জীবনে আপনার প্রয়োজনীয়তা, বা আপনার গুরুত্ব কতখানি, সে বিষয়ে ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করুন।আপনার সঙ্গীর মনেও এই বিষয়টি সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা গড়ে ওঠা খুব জরুরি। যদি দেখা যায় সব ক্ষেত্রেই সে নিজের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিতে পছন্দ করে, তাহলে তাকে ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গী করবেন কিনা সেটা ভাবার বিষয়। জীবনের পথে এক সঙ্গে চলতে গেলে, পরস্পরের জন্য কিছু ত্যাগ স্বীকার করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। 

বিয়েতে সম্মত হওয়ার আগে জেনে নিন সে আপনার মা বাবার দায়িত্ব কতটা নিতে প্রস্তুত ?এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে দুজনকেই পরস্পরের পরিবারের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। যদি দুপক্ষই ভাগাভাগি করে নেন দুই পরিবারের বয়ঃজ্যেষ্ঠদের দেখাশোনার ভার, তাহলে সংসার সুখের হবে।

একইভাবে জেনে নিন আপনার ভবিষ্যৎ সঙ্গী, বিনিয়োগ এবং সাংসারিক প্রয়োজনে ব্যয়ের দায়িত্ব ভাগ করতে রাজি তো? বর্তমান সময়ে আর্থিক পরিস্থতি সামাল দিতে, একার আয়ের উপর নির্ভর করলে চলবে না। একজন শুধু আয় করবে আর অন্যজন ব্যয়—এই পদ্ধতি খাটবে না। তাই ভবিষ্যৎ-কে সুগম করতে বিনিয়োগে দুজনেই ভাগীদার হোন। তবেই মিলিত ব্যয়ে আনন্দ পাবেন।

বিবাহিত জীবনে সন্তান আর একটি আপোসের জায়গা। আপনার হবু জীবনসঙ্গীর মধ্যে সন্তানদের জন্য সেই আপোসটুকু করার মতো মানসিকতা রয়েছে তো? সঙ্গীটি একজন অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ অভিভাবক হতে প্রস্তুত তো? বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন বিয়ের আগেই।

জীবন সর্বদা সরলরেখা মেনে চলে না। জীবনে উত্থান-পতন আসবেই। সেক্ষেত্রে যে- বিষয়টা বিয়ের আগে জেনে নেওয়া সবচেয়ে জরুরি তা হল, যাকে আপনি বিয়ে করতে চলেছেন তিনি আপনার দুঃখ এবং কষ্টগুলোর অংশীদার হতে প্রস্তুত কিনা। আপনার জীবনের অন্ধকার সময়ে তিনি যদি আপনার কষ্টের ভাগ নিতে না পারেন, তাহলে তিনি আপনার উপযুক্ত নন।

বিয়ে মানেই কিন্তু একগুচ্ছ আপোস। আপনার সঙ্গী সেগুলো করতে প্রস্তুত কিনা, তা বিয়ের আগেই জেনে নিন। বিয়ের পরে আপনার ভালোবাসার সঙ্গে, তার নিজের জীবনের কোনও তুচ্ছ চাহিদার দ্বন্দ্ব দেখা দিলে– তিনি কোনটিকে গুরুত্ব দেবেন, তা বিয়ের আগেই বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

ইগো এমন একটি জিনিস, যার কারণে বহু দাম্পত্য ভেঙে যায়। তুচ্ছ ঝগড়া অশান্তি সব দাম্পত্যে ঘটে। কিন্তু মান অভিমান ভুলে আবার পরস্পরকে আঁকড়ে ধরাই হল সফল দাম্পত্যের মন্ত্র। জেনে নিন আপনার সঙ্গী প্রয়োজনে ইগো বিসর্জন দিতে প্রস্তুত কিনা।

যদি সবকিছু বিচার করে দু’জনকে একে অন্যের উপযুক্ত বলে মনে হয় তবেই এগোন বিয়ের দিকে। নচেৎ নির্দ্বিধায় বেরিয়ে আসুন সম্পর্ক থেকে। একটা নিষ্ফল সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রাখার চেয়ে, তা থেকে বেরিয়ে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ নয় কী? ত্যাগ স্বীকার করার মানসিকতা দুজনেরই থাকা প্রয়োজন। না হলে পদে পদে অশান্তি ভোগ করতে হবে। তাই সহনশীলতা, ধৈর্য্ আর ভালোবাসা– এই তিনটিকে পাথেয় করে এগিয়ে যান নতুন জীবনের পথে।জীবনসঙ্গীকে প্রকৃত বন্ধু মনে করুন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...