আপনার সম্পর্কের মূলমন্ত্র কী? চিরদিন সুখী হয়ে একসঙ্গে বাঁচা নাকি ভাঙনের ভয়ে একে অপরের থেকে গা বাঁচিয়ে কোনও ভাবে সম্পর্ক বয়ে চলা?  জীবনে প্রেম-ভালোবাসা থাকবেই। ভালোবাসার সম্পর্ক নারী-পুরুষকে অনেক বেশি চাঙ্গা করে রাখে। বলা হয়, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ভালোবাসার চেয়ে ভালো উপাদান আর নেই। কিন্তু শুধুমাত্র ভালোবাসা দিয়ে কোনো Relationship টিকিয়ে রাখা যায় না।

সম্পর্কের সাফল্য কীসে আর ব্যর্থতাই বা কীসে- সেটা বিচার করার উৎকৃষ্ট সময় বোধহয় তখনই, যখন আপনার মনে হতে শুরু করবে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে সম্পর্কে কোথাও একটা ভাঙন ধরছে। এই ফাটলটা বড়ো হয়ে, সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ হওয়া অবধি অপেক্ষা করবেন না। তার বদলে মেরামত করার চেষ্টা করুন। একটা বিশ্লেষণী মন নিয়ে ভাবুন ঠিক কোথায় ভুল হচ্ছে। ঠিক কোন জায়গাটায় গরমিল। নিচে দেওয়া হল কিছু Relationship Tips, যা আপনাকে সাহায্য করবে।

একে অন্যকে সমর্থন

পৃথিবীর আর সবার চাইতে আপনি আপনার সঙ্গীর কাছে আলাদা কেউ কেন ? কারণ এই যে,  সে বিশ্বাস করে যে সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে পৃথিবী অন্যদিকে চলে গেলেও আপনি তাকে ছেড়ে যাবেন না। তার পাশে থাকবেন। তাকে সমর্থন করবেন। আর এই বিশ্বাসটুকুই আপনাকে আপনার সঙ্গীর চোখে আলাদা করে তোলে। করে তোলে অনন্য। তাই সেই বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়ে সঙ্গীর পাশে থাকুন সবসময়।

সঙ্গীকে বদলানোর চেষ্টা করবেন না

আপনি আপনার সঙ্গীকে যখন ভালোবেসেছিলেন তখন আর এখনে কি খুব তফাত? তাহলে হঠাৎ করে কেন আপনার মনে হচ্ছে যে সে বদলে গেলে ভালো হতো ? হতে পারে আপনার দৃষ্টিভঙ্গী বা আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আপনার সঙ্গীর সেটা না-ও হতে পারে। তার সাথে ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করুন। সে যেমন আছে তেমনই তাকে প্রশংসা করুন। সে যদি পাল্টাতে না চায় তাহলে জোর করতে যাবেন না। সেটা হতে পারে পোশাক কিংবা আচরন। এটির ফলাফল কখনোই শুভ হয় না। বরং জটিলতর হয়ে দাঁড়াবে আপনার সুন্দর সম্পর্কটির পক্ষে।

আপাত দৃষ্টিতে আপনার চোখে না পড়লেও বাস্তবে আরও অনেকের মতনই সম্পর্কের কিছু খুঁটিনাটি বিষয়কে হয়তো আপনিও এড়িয়ে যাচ্ছেন। ব্যাপারগুলো ঠিক চোখে পড়ার মতন না হলেও, একেককটি ছোট্ট ঘটনা কিন্তু আপনাকে আরও সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারে। আপনার সম্পর্ককে করে তুলতে পারে সজীব আর প্রাণবন্ত।তাই পিরিয় মানুষটির পছন্দের কিছু জিনিস কিনে নিয়ে গিয়ে উপহার দিন তাকে। পুরো কোনও জায়গায় একসঙ্গে যান বহু বছর পর।দেখবেন এগুলে মেরামতে সহায়তা করবে।

পরিস্থিতির বিশ্লেষণ

দেখা যায়, কোনো কোনো সম্পর্ক বহুবছর টিকে রয়েছে। মনোমালিন্য হলেও ভেঙে যায়নি। আবার এও দেখা যায় কোনো কোনো সম্পর্ক খুব কম সময়ের পরেই ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। এই ভেঙে যাওয়া সম্পর্কগুলোর দিকে আঙুল তুলে অনেকে বলেন, ওটা ভাঙারই ছিল, তাই ভেঙে গিয়েছে। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছেন এর পিছনের আসল কারণটা কী?

আসলে একটা সম্পর্কে, দুজন মানুষ একে অপরের সঙ্গে থাকতে চায়। তাই তাদের মধ্যে মানসিক মিলটা খুব জরুরি হয়ে পড়ে। সেই একাত্মতায় যখন অপছন্দের কিছু আসে, তখনই সমস্যা দেখা দেয়। আর তা ভেঙে যায়। তাই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য এমন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা উচিত- যার সঙ্গে মনের মিল আছে। যার সঙ্গে পছন্দ-অপছন্দগুলো মেলে।

ব্রেক-আপ নিয়ে অযথা ভয় দেখাবেন না

কোনো বিষয় নিয়ে বিবাদ হলেই ব্রেক-আপের কথা মাথায় আনবেন না, নিতান্তই যদি বাধ্য না হন। কথায় কথায় ব্রেক-আপের ভয় দেখাবেন না,  এতে স্বাভাবিক আস্থা ও বিশ্বাসের অবক্ষয় হয়, যা সম্পর্ককে ঢিলে করে দেয়। ব্রেক-আপের ভয়কে সামনে রেখে কোনও সম্পর্ক সুস্থ ভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। একে অপরকে বোঝান- আপনারা একসঙ্গে থাকবেন বলেই একই পথে চলছেন, তাই নিজেদের সব সমস্যাগুলোকে নিজেদেরই সামলে উঠতে হবে। ব্রেক-আপ করলে হয়তো একটি সম্পর্কের অবসান হবে, কিন্তু আদতে কি সুখী হওয়া সম্ভব?

মনে রাখুন কেউ-ই আমরা পার্ফেক্ট নই। নারী-পুরুষ উভয়েরই স্বাধীনতাবোধ রয়েছে। স্বাধীন চিন্তা ও নিজের একটি স্বতন্ত্র জগৎ রয়েছে প্রতিটি মানুষেরই। ভালোবাসার সম্পর্ক এমনই হওয়া উচিত যা পরস্পরের স্বাধীনতা, মূল্যবোধ ও সম্মানের স্থানগুলোকে অক্ষত ও সুরক্ষিত রাখবে। সম্পর্ক মেরামত করার পরিস্থিতি পর্যন্ত যেতে দেবেন না। তার আগেই যত্নশীল হোন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...