বিয়ে জীবনের একটি স্পেশাল অকেশন। যত দিন যাচ্ছে, ফ্যাশন এবং স্টাইল নিয়ে যত বেশি মানুষ সচেতন হচ্ছেন– তত দ্রুত বদলে যাচ্ছে বিয়ের সাজসজ্জা। মেক-আপে শুধু নয় পোশাকেও একটা নান্দনিকতার প্রয়োজন হয় বিয়ের অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে।
এখন গ্লোবাল ফ্যাশনের যুগ। তাই নিজেকে সুন্দর করে তুলে ধরতে বর-কনে দুজনেই সমান ভাবে আগ্রহী। তাই শুরুতেই একটু ছেলেদের সাজগোজ বিষয়ে দু-চার কথা বলে নেওয়া প্রয়োজন। বিয়ের পোশাক হিসেবে ছেলেরা নির্দ্বিধায় বেছে নিয়েছেন ধুতি, শেরওয়ানি এবং বন্ধগলা। এটা এমনকী আজকাল বিদেশিদেরও সমান ভাবে আকৃষ্ট করে। অনেকেই ভারতীয় ফ্যাশনকে আপন করে নিয়েছেন বিয়ের পার্টিতে। ফলে ছেলেদের পোশাক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করা যায় না, এই ধারণা এখন সম্পূর্ণ ভুল বলে প্রমাণিত।রইল Tips on Wedding day attire৷ জেনে নিন Fashion tips for Brides and Grooms.
বরের সেরা সাজ
যে-কোনও পোশাকের সঙ্গেই এখন মানুষের পরীক্ষানিরীক্ষা বা মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চেনা পোশাকের ডিজাইন বদলে, ছাঁটকাট বদলে- তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন কিছু। থাকছে বিশেষ কোনও কালার বা কাট টিম-আপ করার স্বাধীনতা। সেই কারণেই কালার্ড ধুতিকে পেছনে ফেলে, আফগানি প্যান্ট বা ধোতি সালোয়ার হয়ে উঠেছে বরের পোশাক।
ফ্যাব্রিক ও রং
এবার আসি ফ্যাব্রিক-এর কথায়। আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী সুতি, খাদি, লিনেন, সিল্ক কখনও পুরোনো হবার নয়। বিয়েতে আর্দি কালারের পরিবর্তে ব্রাইট কালারই বাছুন। শেরওয়ানি পরা যদি মনস্থ করেন তবে, সেটা কনের শাড়ির বা লেহেঙ্গার রঙের সঙ্গে রং মিলিয়ে কিনুন। ভালো কাপড় কিনে দর্জি নিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন। অফ হোয়াইট, মেরুন বা সোনালি রঙের শেরওয়ানিই বেশি পরেন ছেলেরা। কিন্তু আপনি প্রথা ভেঙে রাস্ট কালার, ক্রিমসন বা নীল ট্রাই করতেই পারেন। আবার কনের লাল বেনারসির সঙ্গে কনট্রাস্ট রেখে অফ হোয়াইট বা গোল্ডেনও পরতে পারেন।
পাঞ্জাবি
বিয়েতে শর্ট পাঞ্জাবি মোটেই ভালো দেখায় না। তাই গর্জিয়াস এবং সুন্দর কাজ করা বড়ো ঝুলের পাঞ্জাবি কিনুন, সিল্ক, ভেলভেট বা সাটিন, যে-কোনও মেটিরিয়ালেরই হতে পারে এটা। পাঞ্জাবি পরলে অবশ্য পাজামাই ভালো লাগবে। সঙ্গে পায়ে পরুন নাগরা জুতো। তবে খুব ভারী কাজের নাগরা না পরাই ভালো, পায়ে ফোস্কা পড়তে পারে। ভালো হয় যদি ভেলভেটের নাগরা জুতো পরেন।
মেয়েদের বিয়ের সাজ
মেয়েদের বিয়ের সাজে চিরাচরিত বেনারসির টান তো আজও অমলিন। জারদৌসি বা রেশম বেনারসি, যেটাই পরুন না কেন- এর কাজ আর রং দুটোই নজর কাড়বে। কিন্তু আজকাল বউভাতের সন্ধ্যায় অনেক কনেই লেহেঙ্গা পরতে পছন্দ করেন।
এখন স্টাইল-এ ভীষণ ভাবে ইন স্লিভলেস চোলির সঙ্গে লেহেঙ্গা। এর একটা সুবিধা হল ব্রাইডাল চোলির মতো ভারী হয় না স্লিভলেস চোলি। ফলে ক্যারি করা সহজ। সঙ্গে হালকা নেটের দোপাট্টা মানাবে ভালো আর স্টাইলিশও দেখতে লাগবে। শাড়ি স্টাইলে আজকাল অনেকেই দুপাট্টা ট্যাক করে নেন। এতে বেশ একটা ঘরোয়া লুক আসে। বোল্ড লুক চাইলে কাঁধের একসাইডে পিন করে ঝুলিয়ে দিন দুপাট্টা।
রিসেপশন পার্টিতে
যদি রিসেপশন পার্টিতে অন্যরকম লুক চান, তাহলে লেহেঙ্গার উপর পরুন লং কুর্তি। লেহেঙ্গার কাজ যদি বেশি অর্নামেন্টাল না হয়, তাহলে তা ক্যারি করা যাবে সুবিধাজনক ভাবে। এক্ষেত্রে আপনার লং কুর্তি যেন বর্ণাঢ্য নকশায় ভরা থাকে। সঙ্গে পিঠের দিকে দুপাট্টা ফেলে, দু’হাতের মধ্যে জড়িয়ে রাখুন। স্মার্ট লুক দেবে।
শীতকালে বিয়ে হলে আরও একটু এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন। লেহেঙ্গার সঙ্গে পরুন লং জ্যাকেট। চার্মিং লুক দেবে। এই জ্যাকেট নেটের হতে পারে বা সিল্কের। এতে সিকুইন্স বা জরদৌসির ভারী কাজ হলে তো কথাই নেই। এক্ষেত্রে দুপাট্টা ব্যবহার করার দরকার হবে না। এমনিতেই গর্জিয়াস দেখতে লাগবে।
শাড়ি ড্রেপিং–এ বৈচিত্র্য্য
এখন বিয়ের পোশাকে শাড়ি রাখা হলেও, এটা পরার স্টাইল নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। আপনিও আপনার বিয়েতে স্টাইলিং আর্টিস্ট-এর সাহায্য নিয়ে একটু অন্যরকম ভাবে শাড়ি ড্রেপিং করাতে পারেন। ইন্টারনেটে একটু খুঁজলেই এই সংক্রান্ত ভিডিয়ো পাওয়া যাবে। আপনার যে-স্টাইল পছন্দ, তা আগে থেকেই জানিয়ে রাখুন আপনার মেক-আপ আর্টিস্ট তথা স্টাইলিস্ট-কে।
প্রি–ওয়েডিং ড্রেস
বিয়ের আগের রাতে অনেকেই আজকাল ব্যাচেলার্স পার্টি করেন। সেই প্রি-ওয়েডিং পোশাক হিসেবে বাছতে পারেন গ্ল্যাম গাউন। অর্নেট ম্যাট্রিক্স এমব্রয়ডারি, আকষর্ণীয় রং আর উচ্চমানের ফ্যাব্রিক-ই হল এই পোশাকের সৌন্দর্যের মূলে। ফ্লোর লেংথ এই গাউন-এ আপনি অনায়াসেই হয়ে উঠবেন শো স্টপার।
ব্লাউজ–এ বৈচিত্র্য
ব্লাউজের স্লিভস নিয়ে প্রচুর পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে এখন। বেল শেপ, ফ্লাওয়েন্সি, পাফি স্লিভস- যেটা খুশি পরতে পারেন শাড়ি বা লেহেঙ্গার সঙ্গে মিলিয়ে৷ সঠিক ব্লাউজ-ই কিন্তু আপনার সাজকে সম্পূর্ণতা দেবে।