অনেকেই আছেন যারা খাবারের ফুড ভ্যালুর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন স্বাদকে৷ মশলাদার রান্না ছাড়া তাদের মুখেই রোচে না৷ যদিও চিকিৎসকদের মতে, রোজ তেল-মশলাযুক্ত খাবার শরীরে নানা রোগের সূত্রপাত করতে পারে, তবু অনেকেই জিহ্বা সম্বরণ করতে পারেন না৷ আমাদের বক্তব্য হল, অতিরিক্ত নয়– তবে পরিমাণমতো মশলা  খাওয়া প্রয়োজন৷রান্নায় মশলারও কিন্তু গুরুত্ব রয়েছে৷

স্বাদের ভিন্নতা আনার জন্য এবং খাবারকে সুস্বাদু করার জন্য Indian spices -র গুরুত্ব অপরসীম। নিউট্রিশনিস্টদের মতে, মশলায় ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস থাকে যেটা আমাদের শরীরের সুস্থ কোশগুলিকে ক্যানসার কোশে রূপান্তরিত হতে বাধা দেয়।

নুনের মতোই মশলার সুরক্ষিত প্রয়োগ এবং বিষাক্ত তত্ত্ব সম্পর্কে আমাদের পুরোপুরি জ্ঞান নেই। তবুও এটা জোর দিয়ে বলা যায় যে নিয়মিত, কম মাত্রায় মশলার প্রয়োগ আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।

বুক জ্বালা, চোখ ভালো রাখা, কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হাড়ের জয়েন্ট-এ ব্যথা এবং আলসার জাতীয় যে-কোনও রোগেই মশলার প্রচুর অবদান রয়েছে।

জ্বর, পেট-ব্যথা, ত্বকের রোগ, বদহজম, গলার যে-কোনও সংক্রমণ, সর্দি-কাশি ইত্যাদিতে মশলার Spices in cuisine -এর পরম্পরা বহু যুগ থেকে চলে আসছে।মশলা কোনও রোগকে পুরোপুরি ঠিক করতে পারে না ঠিকই কিন্তু অস্থায়ীভাবে আরাম প্রদান করে এবং রোগের প্রকোপ কমাতেও, অনেক সময় সাহায্য করে।

মশলার উপকারিতা

লবঙ্গ

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ খেলে সঙ্গে সঙ্গে আরাম পাওয়া যায়। লবঙ্গর তেল ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। মাউথ ফ্রেশনার হিসাবেও লবঙ্গের চল খুব বেশি।

জিরে

রান্নায় জিরে ব্যবহার করলে তার স্বাদ আর গন্ধই আলাদা হয়। এছাড়াও জিরে কিন্তু ওজন কমাতেও সাহায্য করে। মশলা হিসে তো সুপরিচিত। জিরেতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন। আয়রন শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে, শরীরে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি মাধ্যমে সেলুলার স্তরে অক্সিজেনের পরিমান বৃদ্ধি করে। জিরে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। কিডনি ও লিভারের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দিয়ে বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়

হলুদ

ঝালে ঝোলে অম্বলে, হেন কোনও রান্না নেই, যেখানে হলুদ ব্যবহার হয় না৷ খুঁজলে কোন পুষ্টিগুণটাই না পাবেন৷ প্রোটিন, ডায়েটারি ফাইবার, নিয়াসিন, ভিটামিন সি ও কে, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রনের মতো খনিজ সবই আছে৷ হলুদ খুব ভালো ইমিউনিটি বুস্টার৷ ক্যান্সার প্রতিরোধক৷ এমনকী আরথ্রাইটিসের ব্যথার প্রশমন ঘটাতেও হলুদ খুব উপকারী। হলুদ খাবারে স্বাদ বাড়ায় এবং শরীরও গরম রাখে। গলায় অথবা বুকে সর্দি জমলে এবং পিত্ত সমস্যায় হলুদ উপকার দেয়। কেটে গেলে অথবা পোড়াতে লাগালে এটা অ্যান্টিসেপ্টিকের কাজ করে। এই গুণের জন্য, স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে হলুদের ব্যবহার করা হয়।

দারচিনি

এটি এক ধরনের গাছের ছাল। পেটে গ্যাস, চুলকানি, হার্টের রোগ, অর্শ, কৃমি, সাইনাস ইত্যাদি রোগের উপশম করে। এছাড়াও ওজন কমাতে দারচিনির কোনও জুড়ি নেই। রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক থাকবে যদি প্রতিদিন দারচিনি খাওয়া যায়। যাদের পলি সিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম আছে তাদের জন্য এই মশলা খুবই কার্যকরী।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...