প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সঞ্জয় লীলা বনশালীর বহুল প্রত্যাশিত সিরিজ হিরামণ্ডি’ এখনও পর্যন্ত এশিয়ার অন্যতম সেরা ডিজিটাল অভিজ্ঞতা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি বছরের শেষের দিকে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা এই সিরিজটিতে মার্ক বেনিংটন, অদিতি রাও হায়দারি, রিচা চাড্ডা, সোনাক্ষী সিনহা, মনীষা কৈরালা, শরমিন সেহেগল এবং সানজিদা শেখ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ইতিহাসের পাতায় বিখ্যাত হওয়া ছয়জন গণিকাকে নিয়ে তৈরি সিরিজটি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। সিরিজটির টিজারে প্রকাশ পেয়েছে একই ফ্রেমে থাকা বলিউডের এই ছয় রূপসীর চেহারা।
বনশালীর এই 'ম্যাগনাম ওপাস' সিরিজটি স্বাধীনতাপূর্ব ভারতের লাহোরে সেট করা হয়েছে,নেতফ্লিক্স যেখানে প্লটটি একটি শক্তিশালী রাজদরবারকে কেন্দ্র করে। খবরে প্রকাশ, Heeramandi-কে, ১৯৬০ সালের মুঘল-ই-আজম চলচ্চিত্রের ডিজিটাল সমতুল্য হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে। গঙ্গুবাই কাথিওয়ারির পর আবার গণিকাদের জীবন নিয়ে চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন বনশালী। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এই সিরিজটি তাঁর জিবনের অন্যতম কঠিন একটি কাজ। এই ওয়েব সিরিজটির আটটি এপিসোড বানাতে তাঁকে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে।
পাকিস্তানের লাহোরের বিখ্যাত নিষিদ্ধ পল্লী হচ্ছে হিরামণ্ডি। এখানে খ্যাতনামা নর্তকী এবং গায়িকাদের নাচ গান শুনতে হিরামণ্ডিতে নিয়মিত হাজির হতেন ব্রিটিশ সেনারা। প্রায় ১৪ বছর আগে চলচ্চিত্র নির্মাতা সঞ্জয় লীলা বনশালীকে লাহোরের Heeramandi এলাকার রাজকীয় কাহিনি নিয়ে ‘হিরামণ্ডি’ বানানোর ধারণা দিয়েছিলেন লেখক মঈন বেগ। একটা পর্যায়ে, লেখক মঈন বেগ তাঁর নিজের স্ক্রিপ্টটি ফেরত চেয়েছিলেন কারণ বেশ কিছু বছর পার হয়ে গেলেও বনশালী এটি নিয়ে কিছুই করেননি। কিন্তু ভাগ্যের লিখন কেউ বদলাতে পারে না। বেগ এবং বনশালী কখনওই কল্পনা করেননি যে, পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাস্তার আইকনিক গল্পটি একটি সিরিজে রূপান্তরিত হবে, সেটিও নেটফ্লিক্সের জন্য। হিরামণ্ডি, যার উর্দু অর্থ হিরের বাজার, কখনও কখনও শাহী মহল্লা নামেও পরিচিত। পাকিস্তানের এই অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্যস্থলটির নাটকীয় পতন ঘটেছিল ব্রিটিশ আমলে। মুঘল যুগে এই অঞ্চলে আফগানিস্তান ও উজবেকিস্তানের নারীরা নৃত্য এবং সংগীতের মাধ্যমে সম্রাটদের বিনোদন প্রদান করতেন। পরে ব্রিটিশ রাজের সময় এই অঞ্চলটি পতিতাবৃত্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। ব্রিটিশ সৈন্যদের বিনোদনের জন্য পতিতালয় গড়ে ওঠে এখানে। আর এই সময়েই হিরামণ্ডি তার সম্মান হারিয়ে ফেলে এবং পতিতাবৃত্তির কেন্দ্র হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।