কোলেস্টেরল শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শরীরে নির্দিষ্ট হরমোন তৈরি ছাড়াও, এটি কোশ গঠন করতে সাহায্য করে। আসলে এটি একটি রাসায়নিক যৌগ। ভালো এবং খারাপ এই দুরকম কোলেস্টেরল থাকে শরীরে। ভালো কোলেস্টেরল লাইপোপ্রোটিন নামে পরিচিত। আর এই লাইপোপ্রোটিন-এর ঘনত্বের উপর নির্ভর করে এর ভালো-খারাপের বিষয়টি এবং এই খারাপ কোলেস্টেরল-ই আসলে বিপদের ঝুঁকি বাড়ায়।
শরীরে ব্যবহারের জন্য যতটা ক্যালোরির প্রয়োজন, বেশি খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে তার চেয়ে যদি অতিরিক্ত ক্যালোরি তৈরি হয শরীরে, তখন ওই অতিরিক্ত ক্যালোরি ট্রাইগ্লিসারাইড-এ পরিণত হয়। আর এই ট্রাইগ্লিসারাইড হল রক্তে জমা হওযা অন্যরকম ফ্যাট। এ ক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার, যদি আপনার শরীরে কোলেস্টেরল-এর মাত্রা বেড়ে যায়, তাহলে রক্তবাহী ধমনীতে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জমা হয়ে সঙ্কুচিত হয়ে পড়তে পারে ধমনীর রক্তবাহী পথ। আর এই অবস্থা হলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে, এমনকী হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
পরীক্ষা এবং চিকিত্সা : সামান্য শ্বাসকষ্ট ছাড়া যেহেতু আর তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যায় না রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল-এর মাত্রা বেশি থাকলে, তাই বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন। পরিবারে যদি মা কিংবা বাবা কারও-র হাই কোলেস্টেরল-এর ইতিহাস থাকে, তাহলে ৩০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি বছরে একবার এবং ৪০ বছর বয়সের পর থেকে ছয় মাসের ব্যবধানে রক্তে কোলেস্টেরল-এর মাত্রা পরীক্ষা করানো আবশ্যক। এই পরীক্ষাটিকে বলা হয় লিপিড প্যানেল বা লিপিড প্রোফাইল। এর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয় এলডিএল কোলেস্টেরল, এইচডিএল কোলেস্টেরল, মোট কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড। এই পরীক্ষার ফল দেখে চিকিত্সক বুঝে যাবেন, আপনার রক্তে কোলেস্টেরল উপযুক্ত মাত্রায আছে নাকি বেশিমাত্রায ব্যাড কোলেস্টেরল রয়েছে এবং তা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ।
চিকিত্সকরা সবদিক বিবেচনা করে ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন এ ক্ষেত্রে। তবে নির্দিষ্ট পাওয়ার-এর লিপিকাইন্ড কিংবা ড্যাজটোর নামের ওষুধ দিতে দেখা যায় সাধারণত। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না। আর ব্লাডপ্রেশার হাই থাকলে কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে অবশ্যই কোলেস্টেরল পরীক্ষা করাবেন। সেইসঙ্গে, ধূমপান, মদ্যপান কিংবা কোনও তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ বন্ধ করতে হবে এবং মাছ, মাংস, ডিম প্রভৃতি খাদ্যগ্রহণও কমাতে হবে যদি কোলেস্টেরল হাই থাকে।