একসময় বাড়িঘর সাজানো হতো সাধারণত দুটি রং-এ– সাদা আর কালো। জানালার গ্রিলের রং থাকত কালো আর দেয়ালগুলির রং থাকত সাদা। কিন্তু সেই সাদা-কালোর যুগ আর নেই। এখন রং-এর যুগ। লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, গোলাপি প্রভৃতি বহুবর্ণে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বাড়িঘর। আপনিও জাগিয়ে তুলুন আপনার অন্তরমহলে ঘুমিয়ে থাকা শিল্পীকে। মনের রং-এ রাঙিয়ে তুলুন বাড়িঘরের প্রতিটি দেয়াল। হয়ে উঠুন সার্থক ‘রং-বাজ’। তবে আপনার রঙ্গিলা মেজাজ-কে পূর্ণ মাত্রায় প্রকাশ করতে হলে রং নির্বাচনেও পারদর্শী হতে হবে। বাড়িঘরের কোথায় কী রং দিলে আলো ছড়াবে এবং নজর কাড়বে, তা জেনেবুঝে রং করতে হবে।
রং-এর সঠিক নির্বাচন
বাড়িঘর রং করার জন্য বাজারে মূলত দু-প্রকার পেন্ট পাওয়া যায়। এক– ওয়াটার বেস পেন্ট এবং দুই– অয়েল বেস পেন্ট। এই দু-ধরনের পেন্ট-এ ‘ভলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ড’ বা ‘ভিওসি’, নামক কেমিক্যাল-এর সঙ্গে আরও কিছু ক্ষতিকারক পদার্থ থাকে। এই মিক্সড কেমিক্যাল ঘরের তাপমাত্রার সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্ষতিসাধন করে। ফলে, মাথা ব্যথা, বমিভাব, শ্বাসকষ্ট, ত্বকের সমস্যা প্রভৃতির শিকার হতে পারেন বাড়ির সদস্যরা। তাই প্রত্যেকেরই উচিত, ওয়াটার কিংবা অয়েল যে পেন্ট-ই কিনুন না কেন, তা যেন ইকোফ্রেন্ডলি পেন্ট হয় তা যাচিয়ে নেওয়া। তবে পেন্ট কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে, কী কী পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়েছে ওই পেন্ট। কারণ, একমাত্র ইকোফ্রেন্ডলি পেন্ট-ই কোনও ক্ষতিকারক পদার্থ দিয়ে তৈরি হয় না। জল, প্রাকৃতিক তেল, প্রাকৃতিক রং, খনিজ পদার্থ এবং বিভিন্ন গাছের রস দিয়ে তৈরি হয় ইকোফ্রেন্ডলি পেন্ট। যা বাড়িঘরে ব্যবহার করলে কোনও ক্ষতি করে না এবং ব্যাকটেরিয়া-ফ্রি রাখে।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, পেন্ট কেনার আগে ভলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ড বা ভিওসি-র মাত্রা দেখে নিন। কারণ, এই অর্গানিক কেমিক্যাল ঘরের তাপমাত্রার সঙ্গে বিক্রিয়া করে বেঞ্জিন, এথলিন, গ্লাইকোল এবং ভিনাইল ক্লোরাইড প্রভৃতি গ্যাস উৎপন্ন করে। আর দীর্ঘদিন যদি এই গ্যাস আমাদের শরীরে যায়, তাহলে বড়ো ধরনের অসুখ হতে পারে। অতএব, পেন্ট-এ ভিওসি-র মাত্রা কম কিংবা একেবারে না থাকাই ভালো।