এখন সারা বিশ্ব প্যানডেমিকের থেকে অনেকটাই অব্যাহতি পেয়েছে ঠিকই কিন্তু কোভিড-১৯-এর মতো অতিমারির কারণে আমাদের জীবনশৈলীতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে যা কিনা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক। নতুন এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ জনসাধারণ বাড়িতে থাকতে বাধ্য হয়েছে। এতে বাচ্চা ৱুড়ো সকলেই আছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে এখন ফিরছে ঠিকই কিন্তু মানুষ বাড়িতে থেকে থেকে অলসতার কারণে স্থূল হয়ে পড়েছেন, চট করে বাইরে বেরোতে তারা চিন্তায় পড়ে যাচ্ছেন। লকডাউন চলাকালীন সময় কাটাবার জন্য এমন খাওয়াদাওয়ায় তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন যা মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এটা কারও অজানা নয় যে আমাদের খাওয়াদাওয়া আর জীবনশৈলীর সঙ্গে ইমিউনিটির গভীর সংযোগ রয়েছে। এখন আমাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। বিশেষ করে ইমিউন সিস্টেমের যে ক্ষতি হয়ে গেছে সেই প্রসঙ্গে আমাদের সাবধান হওয়া খুব দরকার। সবথেকে ক্ষতির মুখে পড়েছে বাচ্চারা। যেমন তাদের মানসিক চাপ সহ্য করতে হয়েছে তেমনি বাড়িতে সর্বক্ষণ কাটাবার ফলে খেলাধুলা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে তাদের যারপরনাই শারীরিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হতে হয়েছে।
সময়ে চাহিদা অনুযাযী জীবনশৈলীতে পরিবর্তন আনাটা Nutrition in children খুব জরুরি যাতে আমাদের বর্তমানের সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যত্ও উত্তম হয়ে উঠতে পারে।
আমাদের বাচ্চাদের জীবন যেখানে খেলাধূলায়, হাসি-আনন্দে ভরে থাকা উচিত সেখানে তারা বাধ্য হয়েছে বাড়িতেই ব্যস্ত থাকার প্রয়াস করতে। এমনকী ভার্চুয়াল স্কুলিং-এর চাপে তাদের দমবন্ধ হয়ে আসার অবস্থা হয়েছে। এছাড়াও দেখা গেছে এই অতিমারীর আগে যেসব বাচ্চারা সঠিক পুষ্টির থেকে এমনিতেই বঞ্চিত ছিল এখন তারা আরও বেশি অপুষ্টির শিকার হয়ে পড়েছে। দ্য ল্যানসেট-এ (বিশ্বের সবথেকে পুরোনো এবং প্রতিষ্ঠিত মেডিকেল জার্নালগুলির মধে অন্যতম) প্রকাশিত একটি অধ্যায়ন অনুসারে, কোভিড-19 অতিমারীর আবহে বাচ্চাদের মধে অপুষ্টির একটা নতুনরূপ চোখে পড়ছে। এতে উদ্বেজনিত অপুষ্টি এবং গ্রোথ না-হওয়া শামিল রয়েছে। বাচ্চাদের মধ্যে ক্রমাগত বাড়তে থাকা ওজন এবং স্থূলতার সমস্যা এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ওদের শরীরে অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টির অভাব রয়েছে। সুতরাং এটা জরুরি যে অতিমারীর আবহ এখন কাটিয়ে ফেলার পর সীমিত গতিবিধির সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যবর্ধক খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা, অ্যাক্টিভ থাকা এবং অবসাদ দূরে রাখার নানা উপায়ের প্রতি মানুষের মনে সচেতনতা বাড়িয়ে তোলা।