কোভিডের কারণে প্রায় দু'বছর স্কুল বন্ধ। যে সব শিশুরা গতবছর অ্যাডমিশন নিয়েছিল তারাও এখনও স্কুলের মুখ দেখল না। তাদের জীবনের একটা বড়ো অধ্যায় শুরু হল বন্ধু-বান্ধবহীন ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে মোবাইল বা কম্পিউটার-এর দিকে তাকিয়ে। সামাজিক মেলামেশা করার এই বিরতি বাচ্চাদেরও ঠেলে দিচ্ছে একাকিত্বের কবলে। যারা একটু বড়ো, সব বুঝতে পারে, চারপাশ সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন তারা নিজেদের পড়াশোনা, একাডেমিক প্রেসার, কেরিয়ার, আর্থিক অনিশ্চয়তার চিন্তায় মানসিক ভারসাম্য Mental Stability হারাতে বসেছে। এরকম যখন পরিস্থিতি তখন, অভিভাবকের দায়িত্ব হল সন্তানের পাশে থেকে তাকে সব ব্যাপারে সাহায্য করা।

সন্তানকে কী ভাবে সাহায্য করতে পারেন অভিভাবকেরা

  • চারপাশের পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন সন্তানের সঙ্গে। বাচ্চার মনে সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করুন। তাদের বোঝান অতিমারির এই পরিস্থিতির ফলে তাদের মনের ভিতর যা অনুভতি হচ্ছে সেটাতে কোনও অন্যায় নেই। সেটা ভয়, দুশ্চিন্তা, রাগ, দুঃখ যে-কোনও কিছুই হতে পারে। একটা ব্যাপারে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন দীর্ঘসময় সন্তানকে একা থাকতে দেবেন না। তার সঙ্গে নানা ধরনের আলোচনা করুন।
  • সন্তানের মনে যা যা প্রশ্ন রয়েছে সেগুলো মন দিয়ে শুনে সন্তানের বয়স অনুযাযী উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন যাতে তারা আশ্বাস বোধ করে। সব উত্তর আপনারও হয়তো জানা নাও হতে পারে। কথোপকথন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন যাতে তাদের মন শান্ত হতে পারে।
  • বাচ্চারা যখন বোর ফিল করবে অথবা দেখবেন অল্পতেই ধৈর্য হারাচ্ছে, তখন তাদের এনকারেজ করুন রুটিন লাইফ-এর থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের পছন্দমতো কোনও অ্যাক্টিভিটি করতে। সেটা বাচ্চা বিশেষে আলাদা আলাদা হতে পারে। কেউ এক্সারসাইজ করতে ভালোবাসে তো কেউ বাইরে একটু হেঁটে আসতে পারে। পছন্দের সিনেমা দেখা থেকে গল্পের বই পড়া, রান্না বা বেকিং, ফোনে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, আঁকা, নাচ, লেখালিখি যে-কোনও কিছুই হতে পারে। এতে বাচ্চার স্ট্রেস লেভেল অনেকটাই কমবে।
  • বাচ্চাকে নিশ্চিত করুন এই দুঃসময় একদিন কেটে যাবে। ভরসা দিন আপনি সবসময় সন্তানের পাশে আছেন। আপনারা একত্রে এই পরিস্থিতি ঠিক কাটিয়ে উঠবেন। বাড়িতে সবকিছু স্বাভাবিক নিয়মে চালাবার চেষ্টা করুন। কোনও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না যা আপনার সন্তানকে হতাশার দিকে ঠেলে দিতে পারে। বাচ্চার মনে দুশ্চিন্তা হতে পারে যে ভালো দিন আর কখনও সে দেখতে পাবে না। তার মনের এই ভয়টাকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে যেটা কিনা আপনার সন্তানকে অবসাদগ্রস্ত করে তুলতে পারে। অভিভাবক হিসেবে আপনাদেরই বোঝাতে হবে প্যান্ডেমিক-এর কারণে এই পরিস্থিতি বর্তমানে চললেও ভবিষ্যতে অবশ্যই এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
  • নিজের সঙ্গে নানা ধরনের সৃষ্টিশীল কাজে সন্তানকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। এর ফলে চারপাশের নেতিবাচক পরিস্থিতি থেকে সন্তান দূরে থাকতে পারবে। নিজস্ব কিছু সৃষ্টির আনন্দে কিছুটা সময় হলেও বাচ্চার মন দুশ্চিন্তার Mental Stability গ্রাস থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারবে। এছাড়াও সর্বক্ষণ টিভি অথবা মোবাইলে খবর দেখা থেকেও বাচ্চাকে বিরত রাখুন। যাতে ক্রমান্বয় দেখাতে থাকা নানা অঘটন এবং পরিস্থিতির ত্রাস বাচ্চাকে বিষাদগ্রস্ত করে তুলতে না পারে।
  • প্যান্ডেমিকের আগে যে জীবনশৈলীতে আপনারা বাড়িতে অভ্যস্ত ছিলেন, অতিমারির আবহেও সেই নিয়ম যতটা সম্ভব মেনে চলার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে যাতে বাচ্চা নিজেকে সুরক্ষিত এবং নিরাপদ বোধ করে। যেমন সময়ে শুতে যাওয়া, ঘুম থেকে ওঠা, খাবার খাওয়া, যার যা শখ পূরণ করা ইত্যাদি। এছাড়াও বাচ্চাদের ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি চলাকালীন বাড়ির কাজে বড়োদের সাহায্য করার কথাও বলতে পারেন। এতে ওরা নতুন কিছু শিখবেও আবার বড়োদের সাহায্য করতে পারছে বলে মনে মনে গর্ববোধও করবে। গার্ডেনিং-এর শখ থাকলে বিকেলে খেলার ছলে সন্তানের কাছে সাহায্য চেয়ে নিতে পারেন। বাচ্চারা গাছ, ফুল ভালোবাসে সুতরাং তারাও সানন্দে মানসিক যাতনা ভুলে গিয়ে নতুন উদ্যমে কাজে লেগে পড়বে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...