বাড়ির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বড় হয়ে ওঠে যেসব শিশুরা, যারা বাড়িতে নিত্যদিন ঝগড়া, ঝামেলা দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, মা বাবার অশান্তি, মারধর, অত্যাচার দেখে, তার মারাত্মক প্রভাব বাচ্চার পরবর্তী জীবনে পড়ে, মূলত Mental Health এবং সম্পর্কে। এই ঘটনাগুলো তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে ভীষণ রকম প্রভাবিত করে। একই সঙ্গে তাদের শারীরিক ক্ষতিও করে।
অনেক ক্ষেত্রে যারা এই জিনিসগুলো দেখতে দেখতে বড় হয় বা শৈশব থেকে সহ্য করার অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায় তারা পরবর্তীকালে নিজের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একই জিনিস করে থাকে অথবা ভয়ের কারণে নতুন সম্পর্কে যেতে দ্বিধা বোধ করে। খারাপ পরিবেশে বড় হওয়ার ট্রমা দীর্ঘদিন তাদের মনের ভিতরে থেকে যায়। অনেকেই সেটা ভুলতে পারে না।
বাড়ির পরিবেশ যে শুধুমাত্র দম্পতির নিজেদের কারণেই খারাপ হয় এমন নয়, পারিপার্শ্বিক নানা ঘটনাবলীও তাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করে এবং মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়, Mental প্রেশার তৈরি করে।
আত্মীয়স্বজনের কারণে ডিভোর্সের হুমকি
বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা নিখিল সফটওয়্যার প্রফেশনাল। স্ত্রীয়ের সঙ্গে বাড়িতে নিত্যদিন খিটমিট লেগেই আছে। আগে অফিসে দীর্ঘ সময় কাটাবার জন্য এগুলো নিয়ে খুব একটা কেউ মাথা ঘামাত না, Mentally খুব একটা প্রভাব ফেলত না। কিন্তু করোনায় লকডাউন শুরু হলে বাড়ি থেকে যখন অফিসের কাজ করা আরম্ভ হল, তখন ঝগড়া উত্তরোত্তর বাড়তে শুরু করল। সমস্যা হল দুই সন্তানকে নিয়ে। একজন কলেজে পড়ে অপরজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। দু'জনেই তখন বাড়ি থেকেই অনলাইনে ক্লাস করছে। সুতরাং মা-বাবার ঝগড়া হচ্ছে দু'জনের সামনেই।
ঝগড়ার কারণ অবশ্য বিশেষ কিছুই নয়। ছোটো ছোটো কাজ নিয়ে মনোমালিন্য, নিজেকে পার্টনারের থেকে সুপিরিয়র প্রমাণ করার প্রচেষ্টা এবং অপরজন যাতে মুখ বন্ধ করে তার জন্য তাকে নীচ প্রতিপন্ন করার নানা চেষ্টা৷
ঝগড়া হলেই নিখিল পুরোনো ঘটনার ঝুলি উপুড় করে ফেলত। কবে মায়ের সঙ্গে স্ত্রীয়ের ঝগড়া হয়েছে, কবে ননদকে ও বাড়িতে আসতে দেয়নি ইত্যাদি ইত্যাদি। আগে যৌথ পরিবারে ওরা ছিল যখন বাচ্চারা খুব ছোটো ছিল। শাশুড়ি-ননদের সঙ্গে নিখিলের স্ত্রী অ্যাডজাস্ট করতে না পারায় ওরা আলাদা হয়ে চলে আসে। দুটো পরিবারে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়।