বাইশ বছর বয়সের এই বিকেলকে আমি কী নামে ডাকব? এই তো সেই পশ্চিম আকাশে সূর্য-ডুবুরির শেষ ডুবের আলো। এই তো, এখানে, স্মৃতিতে কিংবা ভুলে যাওয়া এক গতকাল-এ মফস্সল শহরের গা ঘেঁষে, আধা-শহর আধা-গ্রামের বিবর্ণ এই ইস্কুলবাড়ি ছাড়িয়ে, পথের রেখায়, ছাড়া ছাড়া ঘরবাড়ির নকশা সমেত জংলা ঘুপচিতে-বাঁশঝাড়ের ভুলভুলাইয়া, মাদুর কাঠির খেত বা বিরহী শীতের শিনশিনে দুখ-জাগানিয়া হাওয়ায় দাঁড়িয়ে আছে সেই বিকেল, যেন অকাল বিধবাটি, জীবনপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে আসা যাওয়ার পথের ধারে।

এমনই এক বিকেলে আমরা পালাব ঠিক করেছিলাম। আমাদের চারদিকে ছিল সতর্ক পাহারা। রাস্তার ধারের ঝুপড়ি দোকানের বুড়িটিকে বলা হয়েছিল আমরা পালাতে পারি এবং সে যেন ঝটিতি খবরটা জানিয়ে দেয়। যাকে জানাবে সেও তৈরি হয়ে ছিল। আমাদের ধরে যার হাতে তুলে দেওয়া হবে সেও তৈরি থাকত। সে এক ঝানু পাহারাদার। বলা যেতে পারে মাস মাইনের পাহারাদার।

আজ, পরিণত বয়সে সেই বিকেলের দিকে ফিরে তাকাবার সাহস আমার নেই। আবার না তাকিয়ে অবহেলায় চলে যাবার সাহসও আমি রাখি না। এ যেন ভূতপূর্ব দুঁদে খুনির খুনের জায়গায় বারবার ফিরে আসার গল্প। তা সেই বিকেলে আমি আমার জীবনের প্রথম পাপটি করেছিলাম। আর এই বিকেলে সেই পাপের কথা লিখছি। কী পাপ করেছিলাম আমি?

আজ মনে পড়ে বা গতকাল তারও গতকালে মনে পড়েছিল ভয়ংকর সেই ঘটনার কথা। আমি ঘটনার সিঁড়ি বেয়ে যেন এক পোড়ো মন্দিরের একেবারে ওপরে উঠে যাচ্ছি। ওপরে মানে আরও পেছনে। হিলহিলে হাওয়া দিচ্ছে। মাদুর কাঠির খেতের বুক চিরে এক অষ্টাদশী দউড়োচ্ছে আমার দিকে। সন্ত্রস্ত, তার চোখ আতঙ্কে নীল, পাছে কেউ দেখে ফেলে আমাদের।

তারপর? দেখা হল দুজনায়। মাদুর কাঠির খেত হাঁ হয়ে দেখল। কাছের বাঁশঝাড়ে বুঝি বা তক্ষক ডেকে উঠল। কোথায় ছিল একটা ঘুঘু, এই শেষ শীতের কামড় উপেক্ষা করে গেয়ে উঠল কৃষ্ণগোকুল। আর লাল ঘেরের চমৎকার একটা ফ্রক পরে এক অষ্টাদশী, যে দু’বিঘে  জমিনের মাদুর কাঠির খেত সাঁতরিয়ে এসেছে চুরি করা পাঁচ মিনিট সময়ে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য... সে হাঁপাচ্ছে, তার চোখে মুখে কী একটা তেষ্টা, কী এক অনির্দেশ যাত্রার উদাসীনতা... অথচ তার চিবুকে এক আকাশ মুক্তির নীলিমা। তারপর সে আমার সামনে। কিছুই বলে না শুধু চুপচাপ আমার দিকে চেয়ে থাকে। আমি, বাইশ বছরের তরতরে যুবা, সবেমাত্র ইংরেজির শিক্ষক হয়ে তার বাবার ইস্কুলে পড়াতে এসেছি, তা প্রায় মাস ছয়েক হবে তখন। আমি স্থাণুর মতো দাঁড়িয়ে। কিছু যে বলব, কিছু যে... মনে মনে ফুটছি, বিকেলের পড়ন্ত রোদ্দুরে ওর লাল ফ্রক জ্বলে জ্বলে উঠছে, আমি ভয়ে কাঠ, ঘনঘন শ্বাস পড়ছে ওর আর আমার... তারপর, কে যেন বলে উঠল আমায়, এই ছোকরা, ও কী বলছে শোন!

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...