কেউ ঝুঁকে পড়ে পায়ে হাত রাখতেই চমকে উঠল বন্দনা। ‘না-না, বলে সংকুচিত হয়ে উঠলেও যে প্রণাম করতে এসেছিল, সে কোনও ওজর-আপত্তি শুনতে আগ্রহী নয়। লোকটি চলে যাওয়ার পরই বন্দনা চোখ বন্ধ করে নিয়েছিল। এই সময়ে তার মন অতীত স্মৃতির নানা গলিপথে ঘুরে বেড়াতে শুরু করে। একের পর এক মুখ ভেসে উঠতে শুরু করল স্মৃতিপটে। অনেকগুলি মুখ ধোঁয়াশায় আবছা হয়ে এসেছে। মুখ মনে আসছে, অথচ মুখের মালিকের নাম মনে পড়ছে না। এখন কারওর উপরেই সে আর ভরসা করতে পারে না। তা সত্ত্বেও শৈশবের এক স্বভাব সে কখনওই ছাড়তে পারেনি। মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসিকান্নার পাশে থাকার অভ্যাসেই সে স্কুলের চাকরির পাশাপাশি সমাজসেবাকেও ব্রত হিসাবে নিয়েছে।

সন্ধে সাতটার সময় সুদর্শন পান্ডের বাড়িতে তার ছোটোছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। বিশেষ ইচ্ছে ছিল না যাওয়ার। কিন্তু সুদর্শন তার সমাজসেবী সংস্থা ‘অর্চনা’র সদস্য। বন্দনা স্নান করল, আলমারি থেকে নামিয়ে একটা ময়ূরকণ্ঠী রঙের উজ্জ্বল শাড়ি পরল, সামান্য সাজল, বেরিয়ে পড়ল তারপর।

সুদর্শনের বাড়িতে আজ উৎসবের মেজাজ। ইতিমধ্যে অন্য অতিথিরাও দলে দলে আসতে শুরু করে দিয়েছেন। সকলের সঙ্গে বন্দনার পরিচয় করিয়ে দিয়ে সুদর্শন বলতে লাগল, ‘ইনি বন্দনা দত্ত, ‘অর্চনা’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান।’কয়েকটি কৌতূহলী চোখ চমকে তাকাল বন্দনার দিকে। বন্দনা এ ধরনের দৃষ্টিপাতে অভ্যস্ত। আগে অস্বস্তি হতো তার। এখন আর হয় না। পঁয়তাল্লিশে পড়ল সে গতমাসে। হয়তো এখনও তার ধারালো চোখমুখ আর টানটান শরীর বাইরে লোকের কাছে আকর্ষক মনে হয়। কিন্তু, এরই পাশাপাশি তাদের চোখে অন্য একটা প্রশ্ন ফুটে উঠতে দেখে বন্দনা ভেবে কুল পায় না। সেই চোখগুলি প্রশ্ন করে, ‘এত সুন্দরী হওয়া সত্ত্বেও কেন আপনি বিয়ে করেননি বন্দনা?’

এককালে এইসব প্রশ্ন তাকে বিরক্ত করত, এখন আর করে না। এরই মধ্যে কোনও কোনও কৌতূহলী সাহসী পুরুষ তার কাছাকাছি আসার চেষ্টা করে। কারওর বাচ্চার অ্যাডমিশন নিয়ে সমস্যা, কারওর বা সংসারে পণ দেওয়া নিয়ে ঝামেলা। এসব কিছু না থাকলে সমাজসেবা করার ঝুটো ইচ্ছের ছুতোয় কাছে আসার প্রক্রিয়া জারি থাকে। অনেকক্ষেত্রে বন্দনা এমনও টের পেয়েছে, হয়তো কোনও সমস্যাই নেই, তবু, কোনও কোনও পুরুষ শুধু তার সঙ্গ পাবে এই আশায় তার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...