শব্দহীন কষ্টে প্রাণ ফুরিয়ে আসছিল এক সদ্য যুবতির। তখনই হ্যাঁচকা টানে নিজের কাছে টেনে নিয়েছিল তমাল। টেনে নিয়েছিল বু। দ্বিধা কাটিয়ে উঠে গড়ে উঠেছিল একটা বিশ্বাসের সম্পর্ক। একটা ভালোবাসার সম্পর্ক। সাতটা বছর দুজন দুজনকে ভেঙে-চুরে সম্পূর্ণ নতুন মানুষ করে গড়ে তুলেছিল। পরিবার, পরিজন পেরিয়ে নিজেদের মস্ত এক আশিযানায় কোটি দুঃখের মাঝেও আঁকড়ে ছিল হাজার সুখ...।
কিন্তু তাও সময়ের খাতে খাতে ফল্গুধারার মতো বয়ে গেছে ভয়, বিদ্বেষ, আর মানুষের লালসা। কিন্তু আজ তমাল এত চুপ কেন? আজ তো স্বপ্নপূরণের দিন...। স্বপ্ন দেখার দিন...।
জানলা দিয়ে কস্তুরীর চোখ চলে যায় বাইরে। কালো আকাশে ঢাকা রাতে জেগে থাকে জোনাকি। এলোমেলো অজস্র জোনাকি। মাতৃত্বের এক অদ্ভুত ওম লেগে যেন ওর গোটা শরীরে। রাতভর আলো জ্বেলে রাখা জোনাকিদের দিকে চোখ রেখে কস্তুরী, তমালের শরীর ঘেঁষে আসে।
কথা বলছ না কেন বু?
কথা বলার মতো আর কিছু বাকি নেই আমাদের।
এরকম করে কথা বলছ কেন? আজ যে...। তমালের ঠান্ডা জবাবে শিরদাঁড়া দিয়ে হিম নেমে যায় ওর। কাঁপা গলায় কিছু বলতে গিয়ে থেমে যায় কস্তুরী।
আমার জীবনটাকে তুমি নষ্ট করে দিলে? কেন করলে এমন? হিসহিসে গলায় কস্তুরীকে জিজ্ঞাসা করে তমাল।
কী বলছ আমি বুঝতে পারছি না বু।
শট আপ ইয়োর মাউথ। ওই নামে খবরদার আর আমাকে ডাকবে না তুমি...।
প্লিজ তমাল তুমি এমন করছ কেন?
সরে যাও। একদম সরে যাও। আমাকে ছোঁবে না তুমি। লজ্জা করে না, এখন ন্যাকামি করছ আমার সামনে? আমার মাথাটা এভাবে হেঁট করে দিলে? কী জবাব দেব আমি নিজের কাছে? নিজের প্রেমিকা নিজের সুন্দরী বউ অন্যের বিছানায় শুয়ে আমাকে সন্তান উপহার দিয়েছে? বলো?
তমাল...!
আর কী বলবে তুমি...? আর কীই বা বলতে পারো তুমি...। কত লুকাবে? পাপ কোনওদিন চাপা থাকে না জানো তো? আমার ভাই, আমার বাবা-মায়ের কাছে কী মুখ নিয়ে দাঁড়াব আমি? দ্যাখো, চেয়ে চেয়ে দ্যাখো...। রাগে কাঁপতে কাঁপতে তমাল কস্তুরীর মুখের সামনে একের পর এক মেলে ধরছিল মোবাইলে শৈবাল আর কস্তুরীর পাশাপাশি ঘেঁষাঘেঁষি কয়েকটা ছবি, আর সেই ভিডিওটা...।