দিল্লিতেও বারো মাসে তেরো পার্বণ দেখা যায়। এখানে বিভিন্ন রাজ্যের অধিবাসী থাকাতে এখানে বিভিন্ন ধরনের পুজোপার্বণ অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে যোগদান সত্যিই উল্লেখযোগ্য। 'বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান'— এই বাক্যটির যথার্থরূপ আপনি এখানে সবর্ত্র দেখতে পাবেন।
Delhi বিভিন্ন কারণেই অন্যান্য প্রদেশের থেকে একটু পৃথক। এখানে দেখবেন অত্যাধুনিক শিল্পকলার যত্রতত্র ব্যবহার। পাবেন লাল রঙের এয়ার কন্ডিশন বাসে ভ্রমণের আনন্দ। দিল্লির বাজারদরও অন্যান্য শহরের তুলনায় অনেক বেশি। অন্যান্য রাজধানী শহরের চেয়ে দিল্লিতে গাছপালার আধিক্য উল্লেখনীয়। মানসিকতার দিক দিয়ে বলা চলে, সকলেই যেন সমাজে প্রতিপত্তি স্থাপন করতে বা বর্হিআবরণ দেখাতে ব্যস্ত।
Delhi-র পুরাতন স্মৃতি সৌধগুলোর কাছে গেলেই যেন চোখের সামনে সেই পুরোনো দিনের ইতিহাস ভেসে ওঠে। মনে হয় লালকেল্লায় যেন শোনা যায় নতর্কীদের ঘুঙুরের আওয়াজ। শোনা যায় স্রোতস্বীনী যমুনার জলের কলকলধ্বনি। সে এক অবর্ণনীয় অভিজ্ঞতা। যা শুধু অনুভব করা যায় কিন্তু প্রকাশ করা যায় না। পুরাতন সেসব দিনের স্মৃতিতে ফিরে যেতে গেলে আপনাকে লালকেল্লা বা পাণ্ডব কেল্লার (পাণ্ডব কেল্লাকে অনেকে পুরোনো কেল্লা বলেও অভিহিত করেন) 'লাইট অ্যান্ড সাউন্ড' শো অবশ্যই দেখতে হবে।
আজকাল ‘অক্ষরধাম’ মন্দির এবং ‘লোটাস টেম্পল’ও ভ্রমণার্থীদের খুব আকর্ষণ করে। দিল্লিতে কনউটপ্লেসের কাছে হনুমান মন্দিরও খুব পরিচিত একটি নাম। দিল্লির বহু জায়গাতেই দেখতে পাবেন আগেকার দিনের রাজ-রাজাদের কবরস্থান বা প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষ ও ছোটো ছোটো পাহাড়ের অংশবিশেষ। বর্তমানে পাহাড় কেটে সমতল করে গড়ে উঠেছে মনুষ্যবসতি। এখন আর দিল্লি আগেকার মতো খোলামেলা নেই। সর্বত্রই মানুষের ভিড়।
ইন্দ্রপ্রস্থের পাণ্ডবদের কেল্লার প্রাচীর ও ধ্বংসাবশেষ আজও ভ্রমণার্থীদের আকর্ষিত করে। পুরাণের ইন্দ্রপ্রস্থের পর পাঠানরা দিল্লি তৈরি করে। শহরের কেন্দ্র ছিল পুরোনো কেল্লা ও মেহেরলীর কুতবমিনার অঞ্চল। কিন্তু দিল্লির বিকাশ হয় সম্রাট শাহাজাহানের সৌন্দর্য প্রকাশের কল্পনাশক্তি ও মহৎ প্রচেষ্টায়। তাজমহল ও শাহাজাহানাবাদ তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি। এখানকার পুরোনো দিল্লি শাহাজাহানাবাদের অবশিষ্ট আকার। সম্রাট শাহাজাহান ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে স্থির করলেন যে, যমুনার পাশে এই নতুন শহরটি তৈরি হবে। তাঁর পরিকল্পনা, এই নতুন শহরের প্রধান আকর্ষণ হবে লালকেল্লা ও চাঁদনি চক।