ভোপালের নাগরিক আধুনিকতা, মাণ্ডুর মহল আর পাঁচমারির সবুজে ছাওয়া ভূমি : এক কথায় এই হল মধ্যপ্রদেশ। অনন্য, অনবদ্য, অসাধারণ Travelogue।
ভোপাল
নবাবি ঠাটবাট, আভিজাত্য, আর জর্দার জন্য বিখ্যাত মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল। নবাবি ঐতিহ্য বহন করে চলা ভোপালবাসীদের আচার-ব্যবহার, জীবনধারণও প্রথম দেখায় একটু অবাক করে দেবে।
ভোপাল কিন্তু খুব দ্রুত একটা আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল হয়ে উঠছে। জলাশয়, ঝিল আর পাহাড়ের কোনও অভাব নেই ভোপালে। পাশাপাশি, শহরের চারদিকে বিস্তীর্ণ সবুজ অন্য এক ধরনের সৌন্দর্য দিয়েছে ভোপালকে।
১১ শতকে রাজা ভোজপাল পত্তন করেছিলেন এই নগরের। পরে এক আফগান সেনা, দোস্ত মহম্মদ, নগরীর বিস্তার ঘটান। শহরটা দু’ভাগে বিভক্ত। একটা পুরোনো শহর, একটা নতুন নগর। বেগমদের শাসনের জন্যও ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে ভোপাল। ১৮১৯ থেকে ১৯২৬ পর্যন্ত বেগমরাই ছিলেন এখানকার শাসক।
ভোপালের তাজ-উল-মসজিদ দেখতে আসেন দেশবিদেশের হাজারও পর্যটক। বেগম শাহজাহান ১৯০১ সালে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। নির্মাণ অসম্পূর্ণ ছিল। মধ্যপ্রদেশ স্বতন্ত্র রাজ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার পর, ১৯৭১ সালে মসজিদটির নির্মাণ সম্পূর্ণ করা হয়। মসজিদের বিশাল কক্ষটি এত বড়ো যে, একসঙ্গে কয়েক হাজার লোক সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন। মসজিদটির অলংকৃত ছাদ, ঝকঝকে মার্বেল পাথরের তৈরি মেঝে এবং চওড়া কার্নিশ পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বছরের শেষে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড়ো মেলা ‘ইজতিমা’ আয়োজিত হয় এখানেই।
ভোপাল শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শৌকত মহল এবং সদর মঞ্জিলও দর্শনীয় স্থল। স্থাপত্য শিল্পের এক অনবদ্য নিদর্শন বলা চলে এই দুটি মহলকে। ভারতীয় ও মুঘল শৈলীর আশ্চর্য মিশ্রণ ঘটেছে মহলদুটির স্থাপত্যে। এককালে সদর মঞ্জিলে বসেই শহরের শাসক আমজনতার অভাব অভিযোগ শুনতেন।
ভোপালে অবস্থিত ভারতভবন গোটা বিশ্বের শিল্পপ্রেমী মানুষের অবশ্য দ্রষ্টব্য হয়ে উঠেছে। চারটি মূলভাগে বিভক্ত এই ভবনে আদিবাসী শৈলী থেকে শুরু করে আধুনিক শিল্পকলার নিদর্শন পাওয়া যায়। সারাবছরই ভারতভবনের রঙ্গমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।