মেঘ বলল, যাবি?

লুকোচুরি খেলতে ডাকছে পাইনবন। লাবণ্যমাখা পাইনের পাতায় পাতায় চিকন শিহরণ। সবুজের নিভৃত হোরিখেলা। এক ঝাঁক নিস্তব্ধতা, আকাশচুম্বী ঋজু পাইনবনকে সম্বল করে মায়াজড়ানো পথটা। পথ তখন কথা বলে। ভাব জমায়। ভোরের কথা। কুয়াশায় ভিজে জেরবার হয়ে থাকা ভোর। নিতান্তই সমতলের শহুরে মানুষ আমি। তার ভাষা তো আমি জানি না। আমার অপলক নজর থাকে, সূর্যগোলক কখন উঠবে। আর সহসা হুমড়ি খেয়ে পড়বে বরফিলা কাঞ্চনজঙ্ঘার অবয়বে। তবে সে দেখার কি আর জো আছে? মেঘেরা হুড়মুড়িয়ে নেমে এসেছে। এ মেঘ মায়ার সঞ্চার করে লেপচাজগৎ পাহাড়ি গ্রামে।

এক্কেবারে মেঘ-কুয়াশায় লেপটে থাকা পাইনবন। পাইনের পাতায় পাতায় উগরে দেওয়া জলকণা। টুপটাপ টুপটাপ। একাই হাঁটছি। এন্তার সেলফি তুলছি পাইনের সঙ্গে। এতোল-বেতোল হিমেল হাওয়া। কানামাছি খেলতে ডাকছে কুয়াশা ও কাঞ্চনজঙ্ঘা। এই নিয়ে জলছবির মতো আলো ও আশ্বাসভরা একরত্তি লেপচাজগৎ। ছিনিয়ে নিচ্ছে দৃষ্টিসুখ, মন্ত্রের মতো।

দি ফাইভ ট্রেজার্স অফ স্নো কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে এমনই বিশ্বাস এখানকার পাহাড়ি মানুষজনের। প্রায় ৬,৯৫৬ ফুট উচ্চতায় লেপচা সম্প্রদায় অধ্যুষিত লেপচাজগৎ গ্রামটির অবস্থান। আকাশপানে মাথা উঁচিয়ে রাজকীয় কাঞ্চনজঙ্ঘার শ্বেতশুভ্র শিখরগুলি লেপচাজগতের অহংকার বাড়িয়ে তুলেছে। পাহাড়বাসীরা বিনম্রচিত্তে বলেন, স্লিপিং বুদ্ধ।

নির্ভার, বোবাচিহ্ন হয়ে আছে প্রকৃতি...

প্রকৃতি ও পাইন জঙ্গলের বৈভব নিয়ে লেপচাজগৎ ইদানিং উত্তরবঙ্গ পাহাড়কুলে পর্যটকপ্রিয় স্থান হিসেবে পর্যটন মানচিত্রেও দিব্যি গুরুত্ব অর্জন করে নিয়েছে। চিরকালীন দার্জিলিং আপামর বাঙালিদের বহুবার ঘোরা। সামান্য চেনা নিরিবিলি নির্ভার বোবাচিহ্নের মতো কুয়াশা ও রোদের আলস্য মেখে এই পাহাড়ি গাঁ দার্জিলিং-এর কাছেই। দূরত্ব মাত্র ১৯ কিলোমিটার। ঠিক করলাম, পাইন ফার বার্চ জুনিপারে মোড়া, কুয়াশার গ্রাসে চলে যাওয়া লেপচাজগতের হোমস্টেতে ছোট্ট সফর সারব।

আহা! আজ সকালটা...

অন্য আরেক পাহাড়ি গ্রাম তিনচুলেতে দুরাত কাটিয়ে প্রাতরাশ শেষে আগাম পরিকল্পনা মোতাবেক পাড়ি জমালাম লেপচাজগৎ অভিমুখে। দূরত্ব ২৮.৪ কিলোমিটার। তিনচুলে-লোপচু বাজার রোড ধরে পেশক চা-বাগান, লামাহাট্টা, ছয় মাইল, ঘুম ইত্যাদি পাহাড়ি জনপদ ছুঁয়ে প্রবেশ করি পাইনবনের আঙিনায়। কুয়াশার ছত্রছায়ায় তখন অদ্ভুত মায়াময় লেপচাজগৎ। ভাঙাচোরা রোদ্দুর গায়ে জড়িয়ে ঘন পাইন গাছের সন্নিবদ্ধ সারি। সেখানেই চলে প্রকৃতির অপার রূপবৈচিত্রের খেলা। এখানে বেড়াতে আসা ভ্রামণিকদের সোহাগে ভরিয়ে রাখতে সদা প্রস্তুত হয়ে থাকে লেপচাজগৎ।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...