শুভ অনুষ্ঠানে সাজসজ্জার পাশাপাশি মিষ্টির কথা হবে না— এমন হতেই পারে না। ভারতের সংস্কৃতির  সঙ্গে মিষ্টির অতি মধুর সম্পর্ক। উৎসব-অনুষ্ঠান  উপলক্ষ্যে পোশাক-আশাকের মতোই মিষ্টিরও হরেকরকম সম্ভার হাজির করেন মিষ্টান্ন বিক্রেতারা। যেগুলি দৃষ্টিনন্দন তো বটেই, স্বাদেও লা-জবাব।উত্তর ভারতীয় প্রচলিত কিছু মিষ্টিকেই নতুন রূপে, নতুন রঙে, নতুন আকারে, নতুন ফ্লেভারের সঙ্গেই গ্রাহকদের সামনে হাজির করছেন তারা। মিষ্টির জগতে হলদিরাম, ভিখারাম চন্দমল, পরশুরাম, গাঙ্গুরাম-এর নাম তো শীর্ষে রয়েইছে, পাশাপাশি স্থানীয় মিষ্টান্ন বিক্রেতাদের মিষ্টির স্বাদও কোনও অংশে কম নয়। আসুন জনপ্রিয় সেইসব মিষ্টিগুলির মধ্যে কী কী রয়েছে, তার উপর একবার ঝটতি চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

কাজু বাদামের মিষ্টি

কাজুর মিষ্টি মানে আগে আমরা শুধু কাজু-বরফিই জানতাম। কিন্তু এখন এই ধারণা বদলে দিয়েছেন অভিজাত মিষ্টান্ন বিক্রেতারা। কাজুকে উপকরণ করে এখন নানারকম মিষ্টি তৈরি করতে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে—

কাজু কলস : ঘটের মতো দেখতে হয় এই মিষ্টি।

কাজু গুজিয়া : এই মিষ্টি দেখতে হোলি উৎসবের গুজিয়ার মতো।

কাজু সিঙারা : কাজুর তৈরি মিষ্টি সিঙাড়াকেই বলা হয় কাজু সিঙারা।

কাজু রোলস : পাতলা এবং লম্বা করে বেলে গোল করে মুড়ে তৈরি হয় কাজু রোলস।

কাজু পান : এটি দেখতে পানের মতো দেখতে হয় এই মিষ্টি এবং মিষ্টি পানে ব্যবহৃত হয়। এমন কয়েকটি মশলা দিয়ে তৈরি হয় এই মিষ্টি।

উপরোক্ত সবকটি মিষ্টিই ৫০০ গ্রাম এবং এক কিলোগ্রামের প্যাকেটে বিক্রি হয়।

Special Sweets

চিনাবাদামের মিষ্টি

কাজুবাদামের তৈরি মিষ্টি সকলের কাছেই পরিচিত কিন্তু চিনাবাদামের মিষ্টির সঙ্গে তেমন পরিচিতি নেই সবার। আসলে দেশি ঘি, চিনি এবং চিনাবাদামের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি হয় এই মিষ্টি। গুজিয়া, রোলস, জিলিপি, তিরঙ্গী প্রভৃতি মিষ্টি পাওয়া যায় এই উপকরণে। এসব মিষ্টিতে সামান্য কৃত্রিম রঙেরও ব্যবহার করা হয় আকর্ষণীয় রূপ দেওয়ার জন্য।

মেসু পাক

জনপ্রিয় মিষ্টিগুলির মধ্যে মেসু পাক অন্যতম। ডাল, গমের আটা, চিনি, দেশি ঘি প্রভৃতির মিশ্রণে তৈরি হয় এই মিষ্টি।

টিকিয়া সফ্ট

আলুর টিক্কির মতো দেখতে হয় এই মিষ্টি। দুধ, সুজি, চিনি, খোয়া, দেশি ঘি, গরমমশলা, মেওয়া প্রভৃতি উপকরণে তৈরি হয় এই মিষ্টি। খুব নরম এবং সুস্বাদু হয় খেতে।

পতিসা

রাজস্থানের পরম্পরাগত মিষ্টিগুলির মধ্যে, তালিকার শীর্ষে রয়েছে পতিসা। গমের আটা, চিনি, শুকনো মেওয়া, দেশি ঘি-র মিশ্রণে তৈরি হয় এই মিষ্টি।

সোহন হালুয়া

তিন রকম সোহন হালুয়া পাওয়া যায় মিষ্টির দোকানে। সোহন হালুয়া কাজু, সোহন হালুয়া বাদাম এবং সোহন হালুয়া পেস্তা। এই মিষ্টি তৈরিতে লাগে গমের আটা, দেশি ঘি, চিনি, শুকনো মেওয়া, ডাল, কেশরবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তা প্রভৃতি। মুখরোচক এই মিষ্টির স্বাদ নিতে ভুলবেন না।

Sohanpapri sweet

সোনপাপড়ি

শুকনো ঝুরঝুরে হওয়ার কারণে খুব সহজে নষ্ট হয় না সোনপাপড়ি। তাই একবার বানালে বহুদিন এই মিষ্টির স্বাদ নেওয়া যায়৷ এই জন্য দীপাবলি উৎসবে সোনপাপড়ির চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে এক নয়, অনেকরকম সোনপাপড়ি পাওয়া যায় বাজারে। প্রত্যেকটির রং, আকার এবং স্বাদ ভিন্ন। অরেঞ্জ সোন ট্রিট, চকোলেট সোনপাপড়ি, কোকোনাট সোনপাপড়ি, স্পেশাল সোনপাপড়ি এবং সোন কেক পাওয়া যায় বাজারে এবং প্রতিটিই দুর্দান্ত স্বাদযুক্ত।

এক প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন বিপণির কর্ণধারের মতে, প্যাকেটের মিষ্টির থেকে টিনে ভরা মিষ্টির চাহিদা বেশি। কারণ, টিনে ভরা মিষ্টি বেশি সুরক্ষিত, দীর্ঘদিন রাখা যায় এবং দূরদূরান্তে নিয়ে যাওয়াও সুবিধাজনক। এছাড়া, ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট, এক্সপায়ারি ডেট, কী কী উপাদানে তৈরি প্রভৃতিও বিশদে উল্লেখ করা থাকে টিনের কৌটোতে। কয়েকটি মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান গিফ্‌ট প্যাকও বের করেছে ক্রেতাদের জন্য। তাহলে আর অপেক্ষা কেন? আলোর উৎসবকে মিষ্টিমুখর করে জমিয়ে দিন আড্ডা এবং অতিথিদের মন জয় করে নিন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...