হিউম্যান সাইকোলজি ইজ ভাস্ট। অর্থাৎ, মানব মনস্তত্ত্বের পরিধি বিশাল, প্রায় সীমাহীন এবং গোলকধাঁধার মতো। আসলে আমাদের মস্তিষ্ক কিংবা মনের মধ্যে থাকে অনেকরকম জটিলতর স্তর। তাই, কোনও মানুষের মস্তিষ্ক কখন কোন পথে চালিত হবে, তা সম্পূর্ণ বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। বাইরের রূপের সঙ্গে ভিতরের রূপের বিস্তর অমিল থাকতেই পারে।
অতএব, একবার কোনও মানুষকে দেখে কিংবা কথা বলে, তার সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায় না কিংবা তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্তে আসা যায় না। যদি সত্যিই কারও-র চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বুঝতে হয়, তাহলে তাকে দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে রাখতেই হবে। লুকস, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, চলন-বলন সবটা নিখুঁত ভাবে নিরীক্ষণ করে এবং তার সঙ্গে যারা বসবাস করেন, তাদের থেকে তথ্য নিয়ে তবেই কাউকে বিচার করা যায়।
তবে, এই ধরনের বিচার থেকে সাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা করা যায়। কিন্তু কোনও মানুষের যৌন-ভাবনা কিংবা যৌন-চরিত্র বাইরে থেকে একশো শতাংশ বুঝে ওঠা প্রায় অসম্ভব। এমনও কিছু মানুষ আছেন, যারা ভুগছেন ভয়েউরিস্টিক ডিসঅর্ডার-এ। কিন্তু কী এই ভয়েউরিস্টিক ডিসঅর্ডার? মনোশিজ-এর কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট শ্রীতমা ঘোষ এই বিষয়ে জানিয়েছেন বিস্তারিত।
ভয়েউরিস্টিক ডিসঅর্ডার (Voyeuristic Disorder) এমন এক মানসিক রোগ, যেখানে একজন ব্যক্তি অন্য কারও ব্যক্তিগত বা যৌন কার্যকলাপ, যেমন— পোশাক খোলা বা যৌন-সঙ্গম গোপনে দেখে যৌন-উত্তেজনা অনুভব করেন। এই ধরনের কার্যকলাপ তাদের জন্য একটি প্রধান যৌন-আকর্ষণ বা ফ্যান্টাসি হয়ে দাঁড়ায়। যখন এই ধরনের লুকিয়ে দেখার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ওই ব্যক্তি কিংবা অন্য কারওর সামাজিক সম্মানহানি ঘটায় কিংবা কর্মজীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে, তখনই এটিকে ওই লুকিয়ে দেখা ব্যাক্তির ডিসঅর্ডার বা রোগ হিসেবে ধরা হয়।
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত এমন লোকদের দেখে যৌন উত্তেজনা অনুভব করেন, যারা ওই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিটিকে দেখতে পান না। এক্ষেত্রে ভয়েউরিস্টিক ডিসঅর্ডার-এ আক্রান্ত ব্যক্তিটি অন্যদের যৌন কার্যকলাপে অতিরিক্ত কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। এবং নিজে চরম মাত্রায় যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন। কিন্তু, ভয়েউরিস্টিক ডিসঅর্ডার-এ আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই তাদের এই ধরনের আচরণের কারণে মানসিক কষ্ট অনুভব করেন। উদ্বেগ, অস্বস্তি কিংবা অপরাধবোধে ভোগেন।





