এক নারী অপর এক নারীর বড়ো শত্রু, একথা সেই আদিকাল থেকে শাশ্বত সত্য। সাধারণত বোন-বোন, বউ-শাশুড়ি, ননদ-ভাইয়ের বউ, এ ধরনের সম্পর্কের মধ্যে একটা ঠান্ডা লড়াই থাকে। যে-মেয়েটি যত ঠান্ডা পলিটিক্স করে সংসারে চালাতে পারবে, জিত তারই।

শাশুড়ি-বউমার সম্পর্কে বন্ধুতার সূত্রপাত করতে, বিউটি পার্লারে একসাথে যাওয়া এক সুন্দর সম্পর্কের দৃষ্টান্ত হতে পারে। শাশুড়িমায়ের দিকে আপনিও বাড়িয়ে দিন বন্ধুত্বের হাত, গৃহশোভার টিপস পড়ে।

নিজের মেয়ে সুন্দরী হোক সব মা-ই চায়। ছেলের বউ সুন্দর হোক এটাও সব মা চায়। অর্থাৎ Mother-in-law। না হোক নিজের মেয়ে, বউ তো সুন্দর হবেই। মা আর শাশুড়ির সম্পর্ক-বাঁধনে অনেক তফাত। শাশুড়ি কখনও নিজের মা হতে পারে না, এ ধারণা বদলের দিন এসেছে। এক্ষেত্রে বউয়ের ভূমিকাই প্রধান। ছেলের বউ ছেলের মায়ের মধ্যে এক প্রজন্মের তফাত। মানসিকতাও আলাদা। যদি দুজনের সখ্যতা বা অ্যাডজাস্টমেন্ট না তৈরি হয়, তাহলে সংসার হয়ে পড়ে অশান্তির পীঠস্থান। এ এক ঠান্ডা লড়াই। শাশুড়ি-মা কিন্তু কখনওই ভাবেন না তিনিও একদিন সুন্দরী বউ হয়ে এসেছিলেন নতুন সংসারে। লজ্জাবনত মুখে তিনিও শুনেছিলেন প্রশংসা ‘কি সুন্দর টুকটুকে বউ।’ আজ নিজে শাশুড়ির পদে উত্তীর্ণ হয়ে কোথায় গেল জেল্লা! স্বামী সংসার নিয়েই তিনি মত্ত। নিজের দিকে তাকাবার সময় কোথায়? বউমা যদি কান্ডারি হয়ে শাশুড়িকে বিউটি পার্লারে নিয়ে যায়, তাহলে সহজ-মধুর সম্পর্কের গুণে সংসার হয়ে উঠবে হাসিখুশিতে ভরা।

সোনালি কলকাতার মেয়ে। দেখেশুনে বাবা বিয়ে দেন হায়দরাবাদে। সেখানে শ্বশুড়বাড়ি বেশ ‘পশ’ এরিয়ায়, বানজারা হিলস। এক ছেলে, রিটায়ার্ড শ্বশুর, ইঞ্জিনিয়ার। ছেলেও তাই। বিয়ের আগেই শাশুড়িকে দেখেছে কলকাতায়। পছন্দ হয়নি খুব একটা, কেমন যেন, কয়েক ঘণ্টায় মহিলাকে উন্নাসিক মনে হয়েছে। যাইহোক সব কি আর পছন্দের হয়! বানজারা হিলসের বাড়িটি বেশ। ওঁরা এখানে গত সাত বছর আছেন, সোনালি কিছুই চেনে না। স্বামী সকালে বেরিয়ে বাড়ি আসতে সন্ধ্যা, তারপরও নিজস্ব কাজ। পারিবারিক যাওয়া আসা লেগেই আছে। সোনালি অনেক ভেবেচিন্তে শাশুড়ি মাকে বলল, ‘চলুন মা আজ পার্লারে যাই, আমি তো কিছুই চিনি না।’ মায়ের গম্ভীর জবাব ‘আমি কোনওদিন পার্লারে যাইনি, প্রয়োজনও পড়েনি। আমি যাব না।’ সোনালি হাল ছাড়ে না, ‘আমার জন্য চলুন।’ সোনালির বলার ধরন, তাকানো দেখে Mother-in-law রাজি হলেন। দুজনে মিলে দুপুরবেলা গাড়ি নিয়ে বের হল। সোনালি বেশ উত্তেজিত। মা ড্রাইভারকে হঠাৎ বললেন দাঁড়াও, ‘এই পার্লারের সামনে।’ নিজে থেকে সোনালিকে ডাকলেন, ‘এসো, এটা এখানকার নামকরা পার্লার, তুমি যাও আমি একঘণ্টা এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ঘুরে তোমায় নিয়ে যাব’। সোনালি একটু ইতস্তত করে বলে উঠল, ‘আমি একদম নতুন, কলকাতায় মা নয়তো দিদি সবসময় সাথে থাকত, আপনি যদি থাকেন।’ একটু বিরক্ত হলেও সোনালির কথা তিনি রাখলেন। সোনালি আনন্দে পার্লারে ঢুকল। Mother-in-law একটা ম্যাগাজিন নিয়ে বসে রইলেন, সোনালি নিজের রূপচর্চা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। সোনালি চেয়েছিল তার শাশুড়ি-মায়ের সাথে এক সহজ সম্পর্ক গড়ে তুলতে। সে বেশ চালাক মেয়ে। একজন বিউটিশিয়ানের সঙ্গে প্ল্যান করে তাকে সঙ্গে নিয়ে শাশুড়ির স্কিন-স্ক্রাবিং আর পেডিকিওর করার কথা বলল। বিউটিশিয়ানটি কথায় বার্তায় বেশ সপ্রতিভ। সোনালিও বেশ জোরাজুরি করল, মা করান না, দেখুন আপনার গোড়ালিটা। একটু পরিষ্কার, একটু মাসাজ, আপনি আরাম পাবেন। বয়স বাড়লে শরীর একটু আরাম চায়, শাশুড়ি-মা বউমার কথা শুনে শরীরচর্চা করালেন। দুজনে বাড়ি এল গাড়িতে। সেই গম্ভীর শাশুড়ি মা যেন উধাও। সোনালি বুঝল সে সফল। বাড়ি এসে হইচই করে সোনালি বিউটি পার্লারের কত সুখ্যাতি করল। সব শুনে শ্বশুর মশাই হাসলেন। গত ত্রিশ বছর তিনি বলে বলে যা পারেননি, বউমা মাত্র কয়েকদিনে সেই অসাধ্য সাধন করেছে। তিনি বেশ খুশি হলেন। শাশুড়ি-বউমা একসাথে পার্লারে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...