মধ্য প্রদেশের হিস্টোরিক্যাল হেরিটেজ সাইটগুলি পেয়েছে বৈশ্বিক স্বীকৃতি। ইউনেস্কো-র সম্ভাব্য তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই রাজ্যের চারটি স্থান। মধ্য প্রদেশের অশোকের শিলালিপি স্থান, চৌষট যোগিনী মন্দির, গুপ্ত আমলের মন্দির এবং বুন্দেলদের প্রাসাদ (দুর্গসমূহ) ইউনেস্কোর মনোনয়নে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সম্প্রতি। এই অন্তর্ভুক্তি ভারতের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছে বলে দাবি করা হয়েছে মধ্য প্রদেশের পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে।
মৌর্যপথ বরাবর অশোকের শিলালিপি স্থল ভারতের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। যেখানে বৌদ্ধধর্ম, শাসনব্যবস্থা এবং নীতিশাস্ত্র সম্পর্কে সম্রাট অশোকের বার্তা প্রকাশকারী শিলা এবং স্তম্ভের শিলালিপিগুলি ২,২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংরক্ষিত রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ পর্যটকদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে সাঁচি স্তম্ভের শিলালিপি, জবলপুরে রূপনাথ মাইনর শিলালিপি, দাঁতিয়ায় গুজ্জারা মাইনর শিলালিপি এবং সেহোরে পাঙ্গুরারিয়া মাইনর শিলালিপি।
চৌষট যোগিনী মন্দিরগুলি নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর নিদর্শন। খাজুরাহো, মোরেনা, জবলপুর, মান্দসৌর এবং শাহদোল-এর অনন্য রাউন্ড শেপ, উপরে খোলা আকাশ, জটিল পাথরের খোদাই প্রভৃতি দেখে মুগ্ধ হতে হবেই পর্যটকদের।
রায়সেন জেলার সাঁচিতে গুপ্ত মন্দির, বিদিশা জেলার উদয়গিরি, পান্না জেলার নাচনা মন্দির, কাটনি জেলার তিগাওয়া, সাতনা জেলার ভুমারা, দামোহ জেলার সাকোর, সাগর জেলার দেওরি এবং গোয়ালিয়র জেলার পাওয়া-সহ উত্তর ভারতের গুপ্ত মন্দিরগুলি মন্দির স্থাপত্যের এক যুগান্তকারী মোড়ককে তুলে ধরেছে।
গড়কুণ্ডার, রাজা মহল, জাহাঙ্গীর মহল, দাঁতিয়া প্রাসাদ এবং ধুবেলা প্রাসাদের মতো বুন্দেলাদের প্রাসাদ-দুর্গ রাজপুত এবং মুঘলশৈলীর এমন এক অত্যাশ্চর্য মিশ্রণ প্রদর্শন করে, যা বুন্দেলা যুগের কারুশিল্প, সামরিক দক্ষতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়কে তুলে ধরে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আরও জানানো হয়েছে, গত বছর ইউনেস্কো মধ্য প্রদেশের ছয়টি ঐতিহ্যবাহী স্থানকে তাদের অস্থায়ী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। যেমন— গোয়ালিয়র দুর্গ, বুরহানপুরের খুনি ভাণ্ডারা, চম্বল উপত্যকার শিলা শিল্প স্থান, ভোজপুরের ভোজেশ্বর মহাদেব মন্দির, মণ্ডলার রামনগরের গোণ্ড স্মৃতিস্তম্ভ এবং ধমনারের ঐতিহাসিক সমাহার। এই সর্বশেষ অন্তর্ভুক্তি মিলে মধ্যপ্রদেশের মোট ১৮টি স্থান ইউনেস্কো-র স্বীকৃতি পেল। এর মধ্যে স্থায়ী তালিকায় স্থান পেয়েছে তিনটি (খাজুরাহো মন্দির, ভীমবেটকা শিলা আশ্রয়স্থল এবং সাঁচির বৌদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ) এবং অস্থায়ী তালিকায় স্থান পেয়েছে ১৫টি।