নন্দীবাগান থেকে কিছুটা ভেতর দিকে স্কুলটা। মানদাময়ী গার্লস হাইস্কুল। এই স্কুলেই চাকরি করতেন তিয়াসা সরকার। হেড মিস্ট্রেস কল্যাণী মণ্ডল নিজের ঘরে বসালেন রক্তিমকে। ভীষণ আন্তরিক ভাবে বললেন, তিয়াসার মৃত্যুটা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না স্যার। আমরা চাই ওর হত্যাকারী কঠোর সাজা পাক।
রক্তিম বলল, আমরা সেই চেষ্টাই করছি। তিয়াসা সম্পর্কে আপনার কেমন ধারণা ছিল একটু খুলে বলুন।
খুবই ভালো মেয়ে, টিচার হিসেবেও বেশ ভালো ছিল। যেমন মিষ্টি দেখতে, স্বভাবটিও তেমনি। ছাত্রী মহলে ওর একটা আলাদা নাম ছিল সুন্দরী ম্যাডাম। তবে ব্যক্তিগত ভাবে ওর জীবন খুব একটা সুখের ছিল না বলেই শুনেছি। যদিও ওসব ও কাউকে মুখ ফুটে কখনও বলত না। আমি রীতা, পম্পা ওদের মুখে শুনেছি।
ওরা কারা?
আমার স্কুলেরই দিদিমণি। ওদের সাথে তিয়াসার বন্ধুত্বটা গাঢ় ছিল।
ওদের সাথে একটু কথা বলা যাবে?
পম্পা আজ আসেনি। রীতা এসেছে, আপনি ওর সাথে কথা বলতে পারেন।
একটা ফাঁকা ঘরে বসার বন্দোবস্ত করে দিলেন হেড ম্যাডাম। রীতা নামের ম্যাডামকে বেশ নার্ভাস দেখাচ্ছিল। রক্তিম ওকে স্বাভাবিক করার জন্য হেসে বলল, আপনি নার্ভাস হবেন না। সেই অর্থে আমি পুলিশের লোক নই, একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ, পুলিশের হয়ে কাজ করছি মাত্র। কয়েকটি সিম্পল কোশ্চেন করব, জানা থাকলে অবশ্যই ঠিক ঠিক উত্তর দেবেন, ব্যস এইটুকুই অনুরোধ। কাজ হল।
সহজ গলায় রীতা বড়ুয়া বললেন, বলুন কী জানতে চান?
আপনি তিয়াসাকে কতদিন হল চেনেন?
পাঁচ বছর হবে। আমরা দুজনে প্রায় একসাথেই এই স্কুলে জয়েন করি। কয়েক মাসের তফাতে। তারপর ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
ওর বৈবাহিক জীবনে একটা ক্রাইসিস ছিল সে ব্যাপারে আপনি কতটুকু জানেন?
তিয়াসা হুট করে বিয়ে করেছিল। দুজনের বয়সের ডিফারেন্সটাও অনেকটা বেশি। তবুও প্রথম দিকে খুশিই ছিল। তলে তলে অশান্তি বাড়ছিল। মাঝে মাঝে বলত, আমার পাপের বোঝা তো আমাকেই বহন করতে হবে। অনেক জোরাজুরিতে একদিন ওর হুট করে বিয়ে করার কারণটা বলেছিল আমাদেরকে।